একইসঙ্গে ঘটনার ভিডিও জনসম্মুখে প্রকাশের জন্য পুলিশের উপর চাপ বাড়ছে। নিহত কৃষ্ণাঙ্গের পরিবারের সদস্যদের আইনজীবীরা চান ভিডিও ফুটেজটি জনসম্মুখে প্রকাশ করা হোক। কারণ, এ ভিডিও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা বৃহস্পতিবার রাতে কারফিউ ভেঙে রাস্তায় বেরিয়ে এসে প্রতিবাদ জোনিয়েছে।
কয়েকশ’ মানুষ মিছিল করে পুলিশ স্টেশনের দিকে যায়। তাদের হাতে ‘আমাদের হত্যা বন্ধ কর’, ‘প্রতিরোধই সুন্দর’ লেখা প্ল্যাকার্ড ধরা ছিল।
তবে আগের দুই রাতের সহিংস বিক্ষোভের পর এদিন বিক্ষোভকারীরা শান্তই ছিল, নিরাপত্তাকর্মীদেরও তাদের উপর চড়াও হতে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
শালর্টের একটি অ্যাপার্টমেন্টের গাড়ি রাখার জায়গায় মঙ্গলবার পুলিশের গুলিতে মারা জান ৪৩ বছর বয়সী স্কট। পুলিশ অন্য এক ব্যক্তিকে ধরতে সেখানে অভিযান চালিয়েছিল।
পুলিশের দাবি, স্কটের কাছে একটি পিস্তল ছিল এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের আদেশ সত্বেও সে পিস্তল ফেলে দিতে রাজি হয়নি।
কিন্তু স্কটের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্কটের হাতে একটি বই ছিল, আগ্নেয়াস্ত্র না।
এ ঘটনার পরপরই ওই এলাকায় বিক্ষোভ জড়িয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার সকালে দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ১৬ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। বুধবার রাতে বিশৃঙ্খল প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছিল।
বিক্ষোভ চলাকালে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তি মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে বলা হলেও পরবর্তী সময়ে আহত ওইব্যক্তি গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন বলে জানানো হয়।
এর পরিপ্রক্ষিতে বুধবার শার্লটে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ন্যাশনাল গার্ড প্রেরণ করা হয়েছে।
নগর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা এক ট্যুইটার বার্তায় জানিয়েছেন, এক বেসামরিক অপর একজনকে লক্ষ্য করে প্রাণঘাতী ওই গুলিটি ছুড়েছিল, পুলিশ ছোড়েনি।
বিক্ষোভ চলাকালে সহিংসতায় আহত এক পুলিশ কর্মকর্তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার আহত ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ওদিকে, বৃহস্পতিবার নিহত কিথ ল্যামন্ট স্কটের পরিবারের সদস্যদের ঘটনার ভিডিওটি দেখার অনুমতি দেওয়া হয়।
যদিও তাদের আইনজীবী ভিডিওটি জনসম্মুখে প্রকাশের আবেদন করে বলেন, “শুধু পরিবারের সদস্যদের ভিডিওটি দেখতে দিলে সেটা উত্তরের পরিবর্তে আরও প্রশ্নের জন্ম দেবে।”
শার্লট পুলিশ ডিপার্টমেন্ট এখন পর্যন্ত ভিডিওটি জনসম্মুখে প্রকাশ না করার সিদ্ধান্তে অটল আছে।
শার্লটের এই ঘটনার একই সময়ে ওকলাহোমার টুলসায়ও একই ধরনের একটি ঘটনায় হত্যাকারী এক পুলিশ কর্মকর্তার গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। টুলসার ঘটনায় প্রকাশিত এক ভিডিওতে নিরস্ত্র ওই কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির খালি হাত স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা বর্ণবাদের অভিযোগের সর্বশেষ ঘটনা এসব হত্যাকাণ্ড। যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিষয়টি একটি জাতীয় বিতর্ক উস্কে দিয়েছে।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা টেলিফোনে শার্লট ও টুলসার মেয়রদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
‘ম্যাপিং পুলিশ ভায়লেন্স’র তথ্য অনুযায়ী এ বছর যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে ৮২১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ২১৪ জন কৃষ্ণাঙ্গ।