শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির পুংগি-রি এলাকায় ৫ দশমিক ৩ মাত্রার ‘কৃত্রিম’ ভূকম্পন শনাক্ত হওয়ার পর কয়েক ঘণ্টা পর পিয়ংইয়ংয়ের এই ঘোষণা আসে।
দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, সম্ভবত এটাই উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় পারমাণবিক পরীক্ষা।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন-হাই এই পরীক্ষাকে উত্তরের ‘আত্মধ্বংসী কর্মকাণ্ড’ এবং তাদের নেতা কিম জং-উনের ‘উন্মত্ত পাগলামি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আর যুক্তরাষ্ট্র এর ফলাফল সম্পর্কে পিয়ংইয়ংকে সতর্ক করে দিয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার মিত্র হিসেবে পরিচিত চীনও বলেছে, তারা দৃঢ়ভাবে এ ধরনের পরীক্ষার বিরোধিতা করে আসছে। পরিস্থিতিকে আরও খারাপের দিকে নেবে এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে উত্তর কোরিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
উত্তর কোরিয়া বলছে, তারা নতুন তৈরি একটি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেডের পরীক্ষা চালিয়েছে এবার। এর মধ্য দিয়ে তারা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে পারমাণবিক বোমা ছোড়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক মিডলবুরি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জেফ্রি লুইসকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স লিখেছে, বিস্ফোরেণে ফলে যে মাত্রার ভূকম্পণ অনুভূত হয়েছে, তাতে এটাই ছিল উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক বোমার সবচেয়ে শক্তিশালী পরীক্ষা।
ভূ-কম্পণের মাত্রা থেকে তিনি ধারণা করছেন, বিস্ফোরণটি ছিল ২০ থেকে ৩০ কিলোটনের সমতুল্য। সেক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার এই বোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমায় আমেরিকার ফেলা বোমার চেয়েও শক্তিশালী।
পুংগি-রি নামের যে এলাকায় উত্তর কোরিয়া এর আগে পারমাণবিক বোমার পরীক্ষাগুলো চালিয়েছিল, এবারের পরীক্ষাও হয়েছে সেই একই এলাকায়।
সম্প্রতি স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিতে ওই এলাকার নিউক্লিয়ার সাইটে নতুন করে তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষণও দেখা গিয়েছিল বলে বিবিসির খবর।
শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার জাতীয় দিবস। সাধারণত এ ধরনের বিশেষ দিনকেই নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের জন্য বেছে নিয়ে থাকে দেশটি।
পারমাণবিক বোমা বা আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের মত মারণাস্ত্র পরীক্ষার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও গত ৬ জানুয়ারি চতুর্থ পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া।
এর আগে তারা ২০০৬, ২০০৯ ও ২০১৩ সালেও পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল।