বিশ্ব থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ আইএস

তুরস্কের সীমান্তের যে অংশের নিয়ন্ত্রণ ছিল আইএসের হাতে, তা হারিয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠীটি; এর ফলে বিশ্বের নানা স্থান থেকে তাদের জঙ্গি সংগ্রহের পথ বন্ধ হয়ে গেল বলে দাবি করা হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Sept 2016, 07:09 PM
Updated : 4 Sept 2016, 07:27 PM

তুরস্ক সীমান্তবর্তী শেষ দুটি গ্রামের নিয়ন্ত্রণও আইএস হারিয়েছে বলে সিরিয়ার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী একটি মানবাধিকার সংস্থাকে উদ্ধৃত করে যুক্তরাজ‌্যের দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট রোববার জানিয়েছে।

যুক্তরাজ‌্যভিত্তিক ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম‌্যান রাইটস’ এর মুখপাত্র ইন্ডিপেনডেন্টকে বলেন, সীমান্তে দুটি গ্রামের সাত থেকে আট কিলোমিটারের পুরো এলাকা থেকে তাদের হটিয়ে দিয়েছে ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’।

আইএসবিরোধী তুরস্কের সেনা অভিযানের সহায়তায় সিরীয় বিদ্রোহীরা এই সফলতা পায়। শনিবার তুরস্কের আরও ট‌্যাংক আল- রাই সীমান্তে নেমেছে। এই শহরটি জারাব্লুজ শহর থেকে ৫৫ কিলোমিটার পশ্চিমে।

‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম‌্যান রাইটস’ এর মুখপাত্র রামি আবদুলরাহমান বলেন, “সব সারা হয়েছে, সীমান্তে এখন আর আইএসের কোনো উপস্থিতি নেই।”

আল কায়দার তৎপরতা স্তিমিত হয়ে পড়ার মধ‌্যে মধ‌্যপ্রাচ‌্যে গজিয়ে ওঠা আইএস যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন নেটো জোটের রাষ্ট্র তুরস্কের সীমান্তবর্তী ইরাক ও সিরিয়ার বড় এলাকাজুড়ে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিল।

যুদ্ধবিধ্স্ত ইরাক এবং গৃহযুদ্ধকবলিত সিরিয়ার যে অংশ গত তিন বছরে আইএস দখলে নিয়েছিল, তার অর্ধেক গত দেড় বছরে তারা হারিয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যারা আইএসে যোগ দিতে গিয়েছিল, তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে তুরস্ক হয়ে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার তথ‌্যই পাওয়া যায়। এখন তাও বন্ধ হয়ে গেল।

তুর্কি সীমান্তের ওই এলাকা আইএসের দখলমুক্ত করতে সিরীয় বিদ্রোহীদের বলতে গেলে কোনো যুদ্ধই করতে হয়নি বলে দাবি করেন আবদুলরাহমান।

“কয়েক ঘণ্টার মধ‌্যেই আইএসকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।”

সিরিয়া সীমান্তে আইএসের বিরুদ্ধে তুরস্কের স্থল অভিযান (ফাইল ছবি- রয়টার্স)

সীমান্তের ৫৫ কিলোমিটার এলাকা কী করে মাত্র দুই দিনে পুনর্দখল হল- জানতে চাইলে আবদুলরাহমান ইন্ডিপেনডেন্টকে বলেন, “আইএস মানবিজ শহরের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পরই কিন্তু বলেছিলাম, এবার তাদের হারার শুরু।

“সত‌্যি বলছি, জারাব্লুজ শহরে যখন তুর্কি সেনারা ঢুকে পড়ে, তখন আইএস কোনো যুদ্ধই করেনি। তারা পালাচ্ছিল। দুই পক্ষের কারও একজনও মারা পড়েনি।”

সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ সরকারকে সমর্থনকারী রাশিয়া সম্প্রতি ওই সীমান্তে আইএসকে লক্ষ‌্য করে বিমান হামলা চালিয়েছিল।

নিজেদের সীমান্তে রুশ ওই অভিযান নেটোভুক্ত তুরস্ক ভালো চোখে না দেখলেও সম্প্রতি দেশটিতে আইএসের কয়েক দফা হামলার পর রিজেপ তায়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের পর দৃশ‌্যপটে পরিবর্তন আসে।

এরপর তুরস্ক নিজেদের সীমান্তবর্তী সিরিয়ার ওই এলাকায় ট‌্যাংক নিয়ে বড় ধরনের অভিযানে নামে। তবে তুরস্ক আইএসের পাশাপাশি কুর্দি বিদ্রোহীদের ঠেকানোর চেষ্টাও চালাচ্ছে।

সিরিয়ার ওই এলাকায় কুর্দিরা স্বশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে, যাদের আবার যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করছে। তবে সীমান্তে কুর্দিদের কোনো রাষ্ট্র যে মেনে নেওয়া হবে না, সে হুঁশিয়ারি ইতোমধ‌্যে দিয়েছেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম।