সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ অবৈধ, জানাল সুপ্রিম কোর্ট

২০০৬ সালে টাটা কারখানার জন্য সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ অবৈধ বলেই জানিয়ে দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট৷

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2016, 10:31 AM
Updated : 31 August 2016, 10:37 AM

জমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী বিচারপতি গোপাল গৌড়া ও অরুণ মিশ্রর ডিবিশন বেঞ্চ বুধবার এ রায় দিয়ে বলেছে, আগামী ১২ সপ্তাহের মধ্যে কৃষকদের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে অধিগৃহীত জমি।

দীর্ঘ ১০ বছর পর সিঙ্গুর মামলার এ নিষ্পত্তিতে ঐতিহাসিক জয় পেলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

২০০৬ সালে টাটা গোষ্ঠীর ন্যানো গাড়ি তৈরির কারখানা গড়তে সিঙ্গুরে প্রায় এক হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করে তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার।

কৃষকের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ক্ষমতায় আসার পরই মমতা সিঙ্গুরের কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আইন পাশ করান রাজ্য বিধানসভায়। কিন্তু সে আইনকে কলকাতা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ জানায় টাটা গোষ্ঠী।

পরে লড়াই গিয়ে শেষ হল সুপ্রিম কোর্টে। বামফ্রন্ট সরকারের তত্ত্বাবধানে হওয়া সেই অধিগ্রহণ অবৈধ ছিল বলে শেষ পর্যন্ত রায় দিল আদালত।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, যারা ক্ষতিপূরণ নিয়েছিলেন, তাদের জমিও ফেরত দিতে হবে এবং ক্ষতিপূরণের টাকা রাজ্য সরকারকে তারা ফেরত দেবেন না। কারণ, গত ১০ বছর জমি তারা ভোগ করেননি। জমি দেওয়ার ক্ষতিপূরণ হিসেবে যে টাকা তারা নিয়েছিলেন, তাকে গত ১০ বছর জমি ভোগ করতে না পারার ক্ষতিপূরণ হিসেবেই দেখা হবে।

আর যে অনিচ্ছুক কৃষকরা জমির ক্ষতিপূরণের টাকা সে সময় নেননি, এবার জমির সঙ্গে তাদের সেই ক্ষতিপূরণের টাকাও দিতে হবে বলে রাজ্য সরকারকে  নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

আদালতের এ রায় শোনার পর সিঙ্গুর জুড়ে বইছে খুশীর জোয়ার৷ এতদিন জমি হারিয়ে, রুটি রুজি হারিয়ে যে অসহনীয় অবস্থার মধ্যে মানুষ দিন কাটিয়েছে, তা থেকে এতদিনে মুক্তি পেলেন সাধারণ সিঙ্গুরবাসী৷ 

মমতাও স্বাভাবিক ভাবেই সুপ্রিম কোর্টের এ রায়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। ২ সেপ্টেম্বর গোটা রাজ্যে সিঙ্গুর উৎসব পালনের ডাক দিয়েছেন তিনি।