এনডিটিভি জানায়, সোমবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত বিলটি পাস হয়। যদিও বিরোধী বামদল, কংগ্রেস ও বিজেপি সদস্যরা নতুন নামকরণের প্রতিবাদে ওয়াক আউট করেছে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নতুন নামকরণের প্রস্তাবটি এখন পার্লামেন্টে উপস্থাপন করা হবে। সেখানে অনুমোদন পেলেই পশ্চিমবঙ্গ নাম বাতিল হয়ে রাজ্যটি ‘বাংলা’ নামে পরিচিত হবে।
২৬ অগাস্ট নতুন নামকরণের প্রস্তাব বিধানসভায় উপস্থাপন করা হয়েছিল।
সোমবার অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাংলা নামের একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক পটভূমি রয়েছে। এমনকি ‘বঙ্গ’ নাম নিয়েও কোনও সমস্যা নেই। যদিও বেশিরভাগ মানুষ চায় নামটা ‘বাংলা’ হোক। ইংরেজিতে এটি হবে ‘বেঙ্গল’ এবং প্রতিবেশী দেশ ‘বাংলাদেশ’ এর সঙ্গে নাম নিয়েও কোনও ধরনের ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হবে না।”
নতুন নামকরণের প্রস্তাব পাস হওয়ার পর মমতা সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাংলায় উচ্চারণ ‘বাংলা’ এবং ইংরেজিতে উচ্চারণ ‘বেঙ্গল’। আমরা কেন্দ্রকে বিধানসভার সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার অনুরোধ করেছি। পার্লামেন্টের পরবর্তী অধিবেশনে এই প্রস্তাব অনুমোদন পাবে বলে আমরা আশা করছি।”
বামপন্থি দলগুলোর বিরোধিতা সম্পর্কে মমতা বলেন, “বামপন্থিরা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারাও নাম পরিবর্তনের চেষ্টা করেছে এবং ব্যর্থ হয়েছে। অথচ এখন তারা নাম পরিবর্তনের বিরোধিতা করছে..যারা এ উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।”
তারও আগে ২০১১ সালে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্র সরকারের কাছে ইংরেজিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল না বলে ‘পশ্চিম বঙ্গ’ বলার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কখনওই সবুজ সংকেত মেলেনি।
পশ্চিমবঙ্গের নতুন নামকরণ নিয়ে সেখানকার শিল্পী, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবীদদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ভারতের জি নিউজকে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ নামের কোনো অর্থ নেই। শুরুতে এই রাজ্যটি বঙ্গভূমি নামে পরিচিত ছিল। পার্টিশনের (১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের) পর রাজ্যটির নাম পরিবর্তন করা হয়। আমাদের অনেকেরই ওই নাম পছন্দ ছিল না। তাই সর্বশেষ এই উদ্যোগকে আমি নতুন করে নামকরণ বলব না, বরং এটি প্রকৃত নামে ফিরে যাওয়া।”