ফ্রান্সে নিষিদ্ধের পর বিশ্বজুড়ে বেড়েছে ‘বুরকিনি’ বিক্রি

সৈকতে নারীদের সাঁতারের পোশাক হিসেবে ‘বুরকিনি’ ফ্রান্সে নিষিদ্ধ হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে এ পোশাকের বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়েছে বলে সিএনএন মানির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2016, 05:35 PM
Updated : 26 August 2016, 05:41 PM

মুখ, হাত ও পায়ের পাতা ছাড়া শরীরের অন্য সব অংশ ঢেকে রাখা বুরকিনি সাঁতারের পোশাক হিসেবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমা দেশগুলোতে মুসলিম নারীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

চলতি মাসে ফ্রান্সের অন্তত ৩০টি শহরে সৈকত ও অন্যান্য স্থানে সাঁতারের সময় বুরকিনি পরা নিষিদ্ধ করা হয়।

এরপর পোশাকটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। জনগণ প্রকাশ্যে কী পোশাক পরবে সে সিদ্ধান্ত দেওয়া ফ্রান্স সরকারের আওতার মধ্যে পড়ে কিনা তা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়।

এই আলোচনায় পোশাকটি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রচার পাচ্ছে বলে মনে করছেন বুরকিনির কারিগররা- বলা হয়েছে সিএনএন মানির প্রতিবেদনে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি বুরকিনি ব্র্যান্ডের মালিক কাউসার স্যাকরানিয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সাঁতারের এই পোশাক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হওয়ার পর থেকে তাদের বিক্রি ৫০ শতাংশ বেড়েছে।

তিনি বলছেন, যেখানে ‘বুরকিনি সমাজের অংশ হওয়ার জন্য নারীদের মুক্ত করে আনছে’ সেখানে পণ্যটি নিষিদ্ধ করা ‘অবিশ্বাস্য’।

স্যাকরানিয়ে বলেন, মুসলিম নারীদের সাঁতারের পোশাক হিসেবে তার ব্র্যান্ড ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পুরস্কার জিতেছে। অন্যদিকে যেসব অমুসলিম নারী নিজেদের আরেকটু আবৃত করে রাখতে চান তারাও তার পোশাক কিনছেন।

এমনকি ইংলিশ টিভি ব্যক্তিত্ব নাইজেলা লওসনের জন্য একটি বুরকিনির নকশা করে দিয়েছেন স্যাকরানিয়ে। তিনি বলছেন, লওসন চেয়েছিলেন সৈকতে সাঁতারের সময় পোশাকটি যেন তার ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে রক্ষা করে।

বুরকিনির উদ্ভাবক হিসেবে পরিচিত আহেদা জানেত্তি সিএনএন মানিকে বলেন, ফ্রান্সে নিষেধাজ্ঞায় পোশাকটির প্রসার ঘটেছে এবং তাতে চাহিদাও বেড়েছে।

সিডনিভিত্তিক এই ব্যবসায়ী বলেন, “অনলাইনে বিক্রি খুবই ভালো। আমি হিসাব করে দেখেছি, গত সপ্তাহে বিক্রি আগের চেয়ে ৯০ শতাংশ বেড়েছে।”

এদিকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ আদালতও বুরকিনি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছে বলে শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

কান শহরের মেয়র চলতি মাসে প্রথম বুরকিনি ব্যবহারের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। এতে বিতর্কের মধ্যে বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় মেয়রকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন আহেদা জানেত্তি।

তিনি বলেন, “মেয়র বুরকিনি নিষিদ্ধ করে আমার জন্য খুব ভালো একটি কাজ করেছেন।”

সিএনএন মানি জানায়, গত কয়েক বছর ধরে আন্তর্জাতিকভাবে বুরকিনি বিক্রি করা যুক্তরাজ্যভিত্তিক পোশাক বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান মার্কস অ্যান্ড স্পেনসারও সম্প্রতি পণ্যটির চাহিদা বাড়ার কথা বলছে।

কোম্পানিটি গত বছর তাদের লন্ডন ফ্ল্যাগশিপ স্টোরে বুরকিনি মজুদ শুরু করে, সেগুলোর সবই এবারের গ্রীষ্মের জন্য ইতোমধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে।