‘উৎখাতের চক্রান্তের’ মুখে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনকে উৎখাতের চক্রান্ত চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2016, 03:58 PM
Updated : 25 August 2016, 04:21 PM

কয়েকটি সূত্র উল্লেখ করে বিবিসি জানিয়েছে, মালদ্বীপে আবদুল্লাহ ইয়ামিনের বিরোধীরা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ খুঁজছে।

ইয়ামিনের মুখপাত্র বিবিসি কে বলেছেন, তারা কেন্দ্রীয় সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা চালানোর দাবির বিষয়ে ওয়াকিবহাল। এ ধরনের পদক্ষেপ “আন্তর্জাতিক নীতিমালার সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন” বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ইয়ামিনের আমলে মালদ্বীপে অতীতের সেই দমনপীড়নের শাসন ফিরে আসতে পারে- এমন আশঙ্কায় দেশটিতে ঘন ঘন বিক্ষোভ হয়ে আসছে।

মালদ্বীপ ২০০৮ সালে গণতান্ত্রিক শাসনে আসে। ওই সময় সাবেক মানবাধিকারকর্মী মোহাম্মদ নাশিদ মালদ্বীপে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট হন। ওই নির্বাচন দ্বীপদেশটির সাবেক ‘লৌহমানব’ মামুন আব্দুল গাইয়ুমের তিন দশকব্যাপী শাসনের অবসান ঘটায়।

এক বিচারককে গ্রেপ্তারের আদেশ দেওয়ার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ২০১২ সালে নাশিদকে আটক করা হয়। এর কয়েকমাস পরে সেনা বিদ্রোহ ও গণবিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

মালদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন ২০১৩ সালে এক বিতর্কিত নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতাসীন হন। সাবেক প্রেসিডেন্ট গাইয়ুমের সৎ ভাই তিনি।

ইয়ামিনকে উৎখাতের কী পরিকল্পনা চলছে তা স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

তবে বিষয়টি নিয়ে সরকার বলছে, এটি বৈধভাবে সরকার উৎখাতেরই আনুষ্ঠানিক প্রচেষ্টা। সরকারের এক মুখপাত্র এ ব্যাপারে বলেছেন, “প্রতিটি গণতান্ত্রিক সমাজের মতো এটি হচ্ছে জনগণ এবং ব্যালটের মাধ্যমে কোনও প্রক্রিয়া, যারা নির্ধারণ করবে পরবর্তী দায়িত্ব কে নেবে।”

ইয়ামিন দেশে এবং বিদেশেও একজন বিতর্কিত বক্তিত্ব। তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মালদ্বীপে বহু রাজনৈতিক কর্মী অভিযুক্ত হয়েছেন, নেতৃস্থানীয় অনেকেও দীর্ঘ কারাদণ্ড পেয়েছেন।

ইয়ামিন সরকারের নানা কড়াকড়ির মধ্যেও মালদ্বীপের রাজধানীতে নিয়মিতই তার শাসনের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সভা-সমাবেশ। গত শুক্রবারও বিরোধী কর্মীদের বড় ধরনের সমাবেশ হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটেছে।

দেশটিতে এ মাসেও একটি কঠোর মানহানি আইন কার্যকর হয়েছে। এ আইনানুযায়ী, ইসলামের জন্য অবমাননাকর মন্তব্য কিংবা সার্বজনীন সামাজিক প্রথা বিরোধী মন্তব্য বা কার্যকলাপের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

তাছাড়া, ৬০ বছর ধরে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড বন্ধ থাকার পর এখন তা আবার চালু হচ্ছে। সরকারের এ সমস্ত পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রও।