বন্যায় বারানসিতে লাশ পোড়ানোয় বিঘ্ন

ভারতে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ছড়িয়ে পড়া বন্যার কারণে হিন্দুদের পবিত্র শহর বারানসিতে গঙ্গার পাড়ে লাশ পোড়ানো বন্ধ হয়ে গেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2016, 09:41 AM
Updated : 24 August 2016, 09:41 AM

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উপায় না পেয়ে কিছু লোক শহরের বাড়ির ছাদগুলোতে লাশ পোড়ানো শুরু করেছে। 

হিন্দুরা গঙ্গানদীকে অত্যন্ত পবিত্র বিবেচনা করে এবং পবিত্র শহর বারানসির গঙ্গাপাড়ে লাশ পুড়িয়ে ছাই গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে। তারা বিশ্বাস করে এতে তাদের আত্মা জীবন-মৃত্যুর যন্ত্রণা চক্র থেকে মুক্তি পেয়ে মোক্ষ লাভ করবে।  

বারানসির গঙ্গার ধারে ৮০টি ঘাটের মধ্যে দুইটি লাশ পোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এগুলো ডুবে যাওয়ায় লাশ পোড়ানোতে বিঘ্ন ঘটছে।

উত্তর প্রদেশ সরকারের মুখপাত্র শৈলেন্দ্র পান্ডে বলেন, “লাশ পোড়ানোর জন্য ঘাটগুলো না থাকায় ঘাট সংলগ্ন পুরনো ভবন ও বাড়িগুলোর ছাদ লাশ পোড়ানোর কাছে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এতে অনেক সমস্যা হচ্ছে।”

শহরটির পুরনো বাসিন্দা উৎপল উপাধ্যায় বলেন, “১৯৭৮ সালে পর থেকে এবারই শহরটি সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে।

“গঙ্গার পানি বাড়ছে, পাড়গুলো ডুবে গেছে, লোকজন লাশ পোড়াতে পারছে না। লোকজন তাদের বাড়িতে ও বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া রাস্তার মধ্যেই প্রার্থনা করতে বাধ্য হচ্ছে।”

উত্তর প্রদেশে হিন্দুদের আরেক পবিত্র শহর এলাহাবাদও বন্যার কবলে পড়েছে। এই শহরটিতেও শবদাহে বিঘ্ন ঘটছে। লোকজন সরু গলির ভিতরে চিতা সাজাতে বাধ্য হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শহরটির এক কর্মকর্তা। 

উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও মধ্যপ্রদেশে ছড়িয়ে পড়া বন্যায় এ পর্যন্ত অন্তত ৪০ জন মারা গেছেন এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে উত্তর প্রদেশে ও বিহারে বন্যার কারণে এক লাখেরও বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্যার পানি শহর ও গ্রামগুলোতে প্রবেশে করার পর উত্তর প্রদেশে অন্তত নয়জন এবং বিহারে ১৫ জন বন্যাজনিত বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় মধ্যেপ্রদেশে আরো বেশ কিছু লোক মারা গেছেন বলে জানিয়েছে পিটিআই।

বর্ষাকালে ভারতে বন্যা একটি সাধারণ ঘটনা হলেও এবার অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে গঙ্গা ও এর উপনদী এবং শাখানদীগুলো বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় মধ্যপ্রদেশ, বিহার ও উত্তর প্রদেশের প্রায় ২০টি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে।