তিমবুকতুর ঐতিহ্য ধ্বংসে জঙ্গি নেতার ক্ষমা প্রার্থনা

মালির তিমবুকতু শহরে ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংসের দায় স্বীকার করে নিজের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেন এক জঙ্গি নেতা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2016, 03:59 PM
Updated : 22 August 2016, 04:10 PM

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) আহমদ আল-ফাকি আল-মাহদি বলেন, “আমি আমার কাজের জন্য খুবই দুঃখিত এবং এজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

“আমি বিশ্বের সব মুসলিমকে একটি উপদেশ দিতে চাই, আমি যে কাজ করেছি সে ধরনের কোনো কাজে নিজেকে জড়াবেন না। কারণ এটি কখনোই মানবতার জন্য ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে না।”

মাহাদির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার নেতৃত্বে ২০১২ সালে জঙ্গিরা তিমবুকতুর প্রাচীন সমাধিমন্দির, সংরক্ষিত প্রাচীন হস্তলিপি ধ্বংস করে। সমাধিমন্দিরগুলো ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’র অন্তর্ভূক্ত ছিল।

এই প্রথম প্রাচীন সংস্কৃতির নিদর্শন ধ্বংসের অভিযোগে আইসিসিতে কোনো মামলার বিচার হচ্ছে। এই আদালতে আসামির কাঠগড়ায়ও তিনি প্রথম জঙ্গি।

আর এবারই প্রথম অভিযুক্ত কেউ আইসিসির বিচারকক্ষে দাঁড়িয়ে নিজের কাজের জন্য ক্ষমা চাইলেন।

আদালতের কৌঁসুলিরা জানান, মাহাদি মালির ইসলামপন্থি জঙ্গি দল ‘আনসার দ্বীন’র সদস্য ছিলেন। দলটি কয়েক মাসের জন্য তিমবুকতু দখল করে রেখেছিল।

ওই সময় তারা মন্দিরগুলো ধ্বংস করে এবং নগরীর প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলো নষ্ট করে ফেলে। পাণ্ডুলিপিগুলোতে প্রাচীন ইতিহাস থেকে জ্যোতির্বিদ্যা সবকিছুই লিপিবদ্ধ ছিল। 

নয়টি সমাধিমন্দির ও একটি মসজিদ ধ্বংস করার জন্য মাহাদির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার সর্বোচ্চ ৩০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

কাঠ ও মাটির তৈরি স্বতন্ত্র স্থাপত্যের জন্য তিমবুকতু বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। ত্রয়োদশ শতক থেকে সপ্তদশ শতক পর্যন্ত ইসলাম শিক্ষার কেন্দ্রভূমি ছিল তিমবুকতু ও এর আশেপাশের অঞ্চল।

১৯৮৮ সালে সেখানকার সমাধিমন্দিরগুলো ‘ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজে’ অন্তর্ভূক্ত হয়।

আল-কায়দা সংশ্লিষ্ট উগ্রপন্থি দল আনসার দ্বীনের সদস্যরা মূলত যাযাবর জাতিগোষ্ঠীর লোক। যারা একসময় মালিতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল বলে অভিযোগ। ফ্রান্স নেতৃত্বাধীন বাহিনী মালি থেকে তাদের তাড়িয়ে দেয়।