মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে মুসলিম

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানাপোলিশ শহরের সবচেয়ে বড় মন্দিরের নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন একজন মুসলমান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2016, 02:28 PM
Updated : 5 August 2016, 04:22 PM

ভারতের মুম্বাইয়ে জন্ম নেওয়া লেফটেন্যান্ট জাভেদ খান তায়কোয়ান্দোতে ব্ল্যাক বেল্টধারী, বক্সিংয়েও পারদর্শী তিনি।

জাভেদ ইন্ডিয়ানাপোলিশের ওই মন্দিরের নিরাপত্তা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন বলে পিটিআইয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়, প্রতিদিন কয়েকশ হিন্দু ওই মন্দিরে ভিড় জমান। জাভেদ খান এখন এই মন্দিরের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

জাভেদ পিটিআইকে এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমার কথা হচ্ছে, আমরা সবাই এক। আমরা সবাই আল্লাহর সন্তান। একটাই আল্লাহ এবং আমরা ভিন্ন ভিন্ন নামে তার প্রার্থনা করি।

“আমি ভারতীয়। আমার পরিবারে অর্ধেক হিন্দু। আমি হিন্দু-মুসলিম বিভেদে বিশ্বাস করি না।”

মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে তিনি বলেন, “আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করছি। বিশেষ বা অসাধারণ কিছু করছি না।”

পুনেতে বড় হওয়া জাভেদ খান ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পরের বছর ইন্ডিয়ানায় আবাস গাঁড়েন। মার্শাল আর্টের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ১৯৮৬ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া-আসা ছিল তার।

জাভেদ জানান, অল্প কয়েক বছর আগে তার এ কাজের শুরু। এই মন্দিরে তার মেয়ের সঙ্গে এক তেলেগু ছেলের বিয়ে হওয়ায় সেখানকার লোকজনকে চিনতে শুরু করেন তিনি। 
 

“আমার মনে হল, এখানে নিরাপত্তার দরকার। তারপর আমি এ কাজের প্রস্তাব করি। আমি এখন মন্দিরের নিরাপত্তা পরিচালক।”

মন্দিরটি কয়েক বছর ধরলেও থাকলেও গতবছর গত জুনে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ওই অনুষ্ঠান রাজ্যের শীর্ষ নেতারা অংশ নিয়েছিলেন।

আনুমানিক এক কোটি ডলার ব্যয়ে তৈরি করা এ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইন্ডিয়ানার গভর্নর মাইক পেন্সও উপস্থিত হয়েছিলেন, যিনি এখন রিপাবলিকান পার্টি থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী।

মন্দির নিয়ে নিজের অনুভুতি প্রকাশে জাভেদ খান বলেন, “আমি যখন মন্দিরে যাই, তখন মনে হয় না আমি আমেরিকায়। মনে হয় ভারতে আছি।

“আমাদের এখানে কয়েকজন বড় মাপের মানুষ আছেন। সবাই অনেক ভাল।”

প্রতি রোববার এবং মাঝে মাঝে শুক্রবার রাতে মন্দিরে যান জাভেদ।

মন্দিরের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান রবী পাত্তর বলেন, “সপ্তাহান্তে ও বড় সমাবেশগুলোতে তিনি আমাদের নিরাপত্তা দেন।

“স্থানীয় পুলিশ বিভাগ তাকে এ জায়গায় দায়িত্ব দিয়েছে।”

ওই মন্দির প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ড. মোহন রাজদান বলেন, “এটা খুবই  চমকপ্রদ। মন্দিরের নিরাপত্তায় তিনি খুবই আগ্রহ দেখান। মন্দিরের সবাই তাকে চেন ও শ্রদ্ধা করে।

“একজন মুসলমান মন্দিরের নিরাপত্তা দিচ্ছেন তা এখন শোনা যায় না। এখানকার ঘটনা একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে।”