জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালি বলছে, ইইউ ত্যাগের জন্য যুক্তরাজ্যকে লিসবন চুক্তির আর্টিকেল ফিফটি কার্যকর করা শুরু করতে হবে, যার আওতায় বিচ্ছিন্নতা নিয়ে আলোচনা চলবে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “আমরা ইউরোপীয় চুক্তির আর্টিকেল ফিফটির ব্যাপারে একমত হয়েছি। এটি খুবই পরিষ্কার- তা হল, একজন সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়তে চাইলে তাকে সেটি ইইউ কে জানাতে হবে।”
“সেটি না হওয়া পর্যন্ত আগবাড়িয়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। ওই পদক্ষেপের পরই কেবল ইউরোপীয় কাউন্সিল গাইডলাইন দেবে, যার আওতায় ইইউ ছাড়া নিয়ে আলোচনা চলবে।”
“তার মানে হচ্ছে, আমরা এ ব্যাপারে একমত যে, ইউরোপীয় কাউন্সিল যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে ইইউ ছাড়ার অনুরোধ না পাওয়া পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিক কোনও আলোচনাই হবে না।”
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের সময় প্রয়োজন।’ কিন্তু খুব বেশি সময় নেওয়া উচিত হবে না’।
গত বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক গণভোটে ইইউ ত্যাগের পক্ষে রায় দেয় যুক্তরাজ্যবাসী। ওই দিন ত্যাগের পক্ষে ৫২ শতাংশ এবং থেকে যাওয়ার পক্ষে ৪৮ শতাংশ ভোট পড়ে।
ইইউ নেতারা সম্পর্ক শেষের প্রক্রিয়া তাড়াতাড়ি শুরু করতে ব্রিটেনের উপর চাপ দিলেও ব্রিটেন বলছে, তারা তাড়াহুড়ো করবে না৷
ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন বলেছেন, ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে ২০০৭ সালের লিসবন চুক্তির আর্টিকেল ফিফটি এখনই কার্যকর করবে না ব্রিটেন৷
কিন্তু মেরকেল বলছেন, “বাস্তবতা হচ্ছে, যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ নাগরিক বিচ্ছেদের পক্ষে ভোট দিয়েছে…. এখন যুক্তরাজ্য লিসবন চুক্তির আর্টিকেল ফিফটি নিয়ে ইইউ-র সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং আমি সেই অপেক্ষায় আছি।”
“আমরা যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে (আর্টিকেল ফিফটি নিয়ে) বার্তা না পাওয়া পর্যন্ত কোনো ধরনের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করতে পারি না।”
তিনি বলেন, “ওই বার্তাটি আসার পর সেটি বিবেচনা করার কাজ রয়েছে। তবে এর জন্য আমাদের দীর্ঘদিন অপেক্ষা করাও উচিত হবে না।”
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলন্দও ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া তাড়াতাড়ি শেষ করার পক্ষে।
ইইউ’র সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক শেষ করার ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ হলে ‘আরও নিরাপত্তাহীন' পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কায় আছেন নেতারা।
যুক্তরাজ্যে গণভোটের ফল প্রকাশের দিনই পদত্যাগের ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তিনি ইইউ’তে থেকে যাওয়ার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন।
অক্টোবরে পদত্যাগ করবেন ক্যামেরন। তিনি ইইউ ছাড়ার প্রক্রিয়াটি পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ওপর ছেড়ে দিতে চান।