ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠনের পর যুক্তরাজ্যই প্রথম দেশ, যারা এই জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে; যার প্রক্রিয়াকে সংক্ষেপে বলা হচ্ছে ‘ব্রেক্সিট’।
২০০৯ সালের ১ ডিসেম্বর কার্যকর হওয়া লিসবন চুক্তিকে বলা হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম সাংবিধানিক ভিত্তি। তারই আর্টিকেল-ফিফটিতে সংক্ষেপে বলা রয়েছে জোট ছেড়ে যাওয়ার কেতা-কানুন।
সেই বিচ্ছেদের পথরেখা কেমন হবে, জানা যাক বিবিসির প্রতিবেদন থেকে।
১. গণভোটে রায় এসেছে বিচ্ছেদের। এখন আনুষ্ঠানিকতা শুরুর অপেক্ষা।
২. (ক) ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আর্টিকেল-ফিফটি অনুযায়ী জোট ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে বিচ্ছেদের দর কষাকষি শেষ করতে দুই বছর সময় পাওয়া যাবে।
(খ) জোটের বাকি ২৭ দেশ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে আলোচনায় বসবে।
৩. (ক) বিচ্ছেদের পর সম্পর্ক কীভাবে এগোবে সেই দর কষাকষির আলোচনা শুরু করবে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
(খ) ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের বাকি ২৭ দেশের সামনে তুলে ধরা হবে বিচ্ছেদের খসড়া চুক্তি।
(গ) ওই চুক্তি কার্যকরের জন্য অন্তত ২০টি দেশের সম্মতি লাগবে, যারা ইইউর ৬৫ শতাংশ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে।
(ঘ) প্রয়োজনীয় সমর্থন পেলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুসমর্থন প্রয়োজন হবে সেই বিচ্ছেদ চুক্তিতে।
৪. দুই বছর পেরিয়ে গেলে সমঝোতায় আসার সময় আরও বাড়ানো যাবে, কিন্তু সেজন্য বাকি ২৭ দেশের সবার সম্মতি লাগবে।
৫. দুই পক্ষ কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে দুই বছর পর ইইউ এর যেসব চুক্তি ও সনদ রয়েছে, সেগুলো আর যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
৭. এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে ১৯৭২ সালের ইউরোপিয়ান কমিউনিটিজ অ্যাক্ট বাতিল করে তার জায়গায় নতুন আইন করতে হবে।
৮. যুক্তরাজ্য যদি আবারও ইউরোপীয় ইউনিয়নে ফিরতে চায়, অন্য দেশের মত তাদেরও আবার নতুন করে আবেদন করতে হবে, সেই সঙ্গে লাগবে সব দেশের সম্মতি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে বলে আসা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইতোমধ্যে তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, আগামী অক্টোবরে কনজারভেটিভ পার্টির কনফারেন্স পর্যন্ত তিনি ডাউনিং স্ট্রিটে থাকছেন। তারপর তার উত্তরসূরি হিসেবে দল যাকে মনোনীত করবে, তার জন্যই আর্টিকেল-ফিফটি কার্যকর করার দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।