রোববার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, চার বছরের ওই বালক খাঁচার প্রাচীর বেয়ে উপরে ওঠে এবং পাশে ১০ ফুট গভীর পরিখার মধ্যে পড়ে যায়।
সেখানে একটি গরিলা তাকে ধরে ফেলে এবং টেনেহিঁচড়ে বেশ খানিকটা পথ নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে গরিলাটি দুই পায়ের মাঝে বালকটিকে চেপে ধরে।
‘বালকটির জীবন বাঁচাতে’ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ১৮০ কেজি ওজনের বিশাল গরিলাটিকে গুলি করে।
শনিবার বিকালের ওই দুর্ঘটনার পর সিনসিনাটি চিড়িয়াখানার যে অংশে গরিলা রাখা হয়েছে সেই অংশ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
চিড়িয়াখানার পরিচালক থাইনে মেনার্ড বলেন, “এটা সব দিক দিয়েই একটি দুঃখের দিন।”
“গরিলাটি বাচ্চাটিকে ভয়ঙ্কর ভাবে টানতে থাকে এবং ছুঁড়ে মারতে থাকে। তাদেরকে (চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে) কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় এবং তারা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কারণ, তারা শিশুটির জীবন বাঁচিয়েছে।”
বাচ্চাটি যখন পরিখার মধ্যে পড়ে যায় তখন সেখানে তিনটি গরিলা ছিল। দুইটি গরিলাকে সঙ্গে সঙ্গে খাঁচার মধ্যে ডেকে নেওয়া হয়। কিন্তু হারাম্বে নামের গরিলাটি সেখানেই থেকে যায়।
শিশুটিকে উদ্ধার করে সিনসিনাটি শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটির বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গরিলাটিতে হত্যা না করে ঘুমের ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলা যেত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মেনার্ড বলেন, “যখন কোনো প্রাণী খুবই উত্তেজিত হয়ে ওঠে তখন অনেক সময় ঘুমের ওষুধ সঠিক কাজ করতে পারে না।”
এই প্রথম সিনসিনাটি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এরকম কারণে কোনো প্রাণী হত্যা করল বলেও জানান তিনি।
১৯৮৬ সালে যুক্তরাজ্যের স্বায়ত্ত্বশাসিত জার্সি দ্বীপে একই ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেবার পাঁচ বছরের একটি বালক গরিলার খাঁচার মধ্যে পড়ে যায় এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
জাম্বো নামের একটি গরিলা বালকটিকে অন্যান্য গরিলাদের হাত থেকে রক্ষা করে এবং পিঠে মৃদু ঘা মেরে তার জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে। জ্ঞান ফিরলে বালকটি কাঁদতে শুরু করে। তখন গরিলাটি সেখান থেকে সরে গিয়ে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে বালকটিকে সরিয়ে নিতে দেয়। এই কৃতিত্বের পর জার্সিতে জাম্বোর ছবি সম্বলিত ডাকটিকিট ছাড়া হয়।