সাইবার চুরি: ইকুয়েডরের ৯ মিলিয়ন ডলার হংকংয়ে

সাইবার হামলার মাধ্যমে ইকুয়েডরের একটি ব্যাংক থেকে গত বছর হাতিয়ে নেওয়া ১২ মিলিয়ন ডলারের ৯ মিলিয়ন হংকংয়ে নিবন্ধিত ২৩টি কোম্পানির মাধ্যমে লোপাট হয়েছিল বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2016, 08:35 AM
Updated : 26 May 2016, 11:28 AM

এ ঘটনা নিয়ে আদালতে উত্থাপিত নথি ও আদালতের আদেশের অনুলিপি পর্যালোচনা করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে বার্তা সংস্থাটি।

সাইবার চুরির মাধ্যমে হংকংয়ে নিয়ে যাওয়ার পর টাকাগুলো কোথায় গিয়েছিল তার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে আদালতের নথিতে।

ইকুয়েডরের ব্যাঙ্কো দেল অসত্রো (বিডিএ) কর্তৃপক্ষ ২০১৫ সালের প্রথম দিকে হংকংয়ের আদালতে ওই কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে।

তাদের অভিযোগ, এই কোম্পানিগুলো ‘অনৈতিকভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল’।

আদালতের কাছে ওই অর্থ উদ্ধারের দাবি জানায় ব্যাংকটি।

হংকংয়ে যাওয়া অর্থের বাইরে খোয়া যাওয়া ৩ মিলিয়ন ডলার যেসব জায়গায় গিয়েছিল তার মধ্যে দুবাই রয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে জমা দেওয়া আরেকটি নথিতে বলা হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবার চুরির এ ঘটনায়ও সুইফট প্লাটফর্ম ব্যবহার করা হয়েছিল।

বিশ্বজুড়ে ১১ হাজার ব্যাংককে যুক্ত করা এই প্লাটফর্মের মাধ্যমেই ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আট কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেওয়া হয়।

তবে সুইফট বলছে, তাদের সার্ভারের নিরাপত্তা কখনও বিঘ্নিত হয়নি।

অর্থ চুরির ঘটনায় হংকংয়ের পাশাপাশি নিউ ইয়র্কের আদালতে মামলা করেছে ইকুয়েডরের ব্যাংকটি। অর্থ ছাড়কারী প্রতিষ্ঠান ওয়েলস ফার্গোকে বিবাদী করেছে তারা।

এ মামলার বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, সুইফটের বার্তা পেয়েই টাকা ছাড় করেছিল ওয়েলস ফার্গো। তবে তারাও এখন বুঝতে পারছে হ্যাকাররা ওই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

সাইবার চোরেরা বিডিএ থেকে সরিয়ে নেওয়া ১২ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৯ দশমিক ১৩৯ মিলিয়ন ডলার হংকংয়ে এইচএসবিসি ও হ্যাং সেং ব্যাংকে চারটি কোম্পানির অ্যাকাউন্টে নেয়।

ওই চার কোম্পানি থেকে অন্তত ৩১ লাখ ডলার ১৯টি অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেওয়া হয়, অর্থাৎ হংকংয়ে নিবন্ধিত আর এক গুচ্ছ কোম্পানিতে ওই অর্থ যায় বলে নথিতে বলা হয়।

ইকুয়েডরের ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রথমে টাকা যাওয়া চারটি কোম্পানি বা সেগুলোর সঙ্গে জড়িত কাউকে চিনত না তারা। দ্বিতীয় ধাপে যেসব অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে সেগুলোও বাস্তবে কোনো ব্যবসা করে না।

গত ডিসেম্বরে এক আদেশে হংকংয়ের ডেপুটি হাই কোর্টের বিচারক কনরাড সিগ্রোট বলেন, ওই চারটি কোম্পানিও ব্যবসায়িক কার্যক্রমের কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের রূপ নেওয়া কোম্পানিগুলো চীনের নাগরিকরা নিয়ন্ত্রণ করেন।

গত বছর মার্চে ওই চার কোম্পানির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেয় আদালত। তবে পরবর্তীতে সবচেয়ে কম ৯৫ হাজার ৭৩১ ডলার নেওয়া কোম্পানিটির সঙ্গে সমঝোতা করে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয় ইকুয়েডরের ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

রয়টার্স বলছে, গত মাস পর্যন্ত ২৩ বিবাদীর মধ্যে পাঁচটির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার বা নাকচ হয়েছে এবং আরও কয়েকটির সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে।