জি-সেভেন সম্মেলন শুরু

বিশ্ব অর্থনীতিকে আরো সমৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সাত দেশীয় প্রধানদের নিয়ে দুইদিন ব্যাপী জি-সেভেন সম্মেলন শুরু হয়েছে।

এস এম নাদিম মাহমুদ, জাপান থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2016, 07:58 AM
Updated : 26 May 2016, 07:59 AM

জাপানের ইসেশিমায় স্থানীয় সময় সকাল ১১ টা ( বাংলাদেশ সময় সকাল ৮ টা) এই সম্মলনের আনুষ্ঠিকভাবে শুরু করেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।

দিনের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ব্রিটেনের ডেভিড ক্যামেরন, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ত্রুদো, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলন্দ ও ইতালির প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান আবে।

এরপর ইসেশিমায় অবস্থিত দুই হাজার বছরের পুরাতন মন্দির পরিদর্শনে যান নেতারা। আর এরপর শিমা কনফারেন্স সেন্টারে মধ্যাহ্ন ভোজের আগে অর্থনীতির বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।

দিনের দ্বিতীয়ভাগে সন্ত্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন, শরণার্থী সংকট নিয়ে আলোচনা হবে। সম্মেলনে থাকছে চীনের বিতর্কিত দ্বীপ নিয়ে আলোচনা।

তবে সম্মেলনের আগে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে  বলেন, জি-সেভেনের লক্ষ্য হচ্ছে উন্নত গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধি অর্থনীতির পথে যাত্রা। মানবিক সংকট ও সন্ত্রাস মোকাবিলায় পাশাপাশি থেকে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি আরো বলেন, গেল বছর আমরা এশিয়ান সম্মেলনে বিশ্ব উন্নয়নের লক্ষ্য ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। তবে জি-সেভেন সম্মেলন থেকে আরো ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জাপান সরকার আগামী পাঁচ বছরের জন্য বিনিয়োগ করবে।

নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিশ্বনেতারা এক যোগে কাজ করবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এর আগে বুধবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। এই সময় তিনি সম্প্রতি ওকিয়েনায় মার্কিন নৌ ঘাঁটিতে সংঘটিত অপরাধকর্মের সমালোচনা করেন।  ভবিষতে নৌ-বাহিনীর কোন সদস্য এই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হকে না বলে শিনজো আবেকে আশ্বস্ত করেন ওবামা।

এছাড়া ব্রিটেনর প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও কানাডার ত্রদোর সঙ্গেও মতবিনিময় করেন আবে।

সাত প্রভাবশালী নেতাদের সম্মেলনকে ঘিরে আগে থেকেই পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নেয় জাপান সরকার। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সারাদেশে এক লাখ পুলিশ মোতায়েন করে।

এরমধ্যে অনুষ্ঠানস্থলের নিরাপত্তায় ২৩ হাজার, সাড়ে তিন হাজার স্থানে সত্তর হাজার এবং হিরোশিমায় সাড়ে চার হাজার পুলিশ নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে বলে জানান দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গেন নাকাতানি।

দুইদিনব্যাপী এই সম্মেলনে দ্বিতীয় দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার হিরোশিমায় সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ঐতিহাসিক এই সফরকে ঘিরে ইতিমধ্যে বেশ সমালোচনা শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এটম বোমায় বিধ্বস্ত এই জনপদে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। সেই সময় বেঁচে যাওয়া একদল নাগরিক ও স্থানীয় হিরোশিমাবাসী ওবামাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসলেও ওবামা সরাসরি তা নাকচ করে দিয়েছেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

শুক্রবার বসছে জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলন

এদিকে জি-সেভেন সম্মেলনের শেষ দিনে এই সাতটি দেশ ছাড়াও এশিয়া ও আফ্রিকার অন্য সাতটি দেশের প্রধানদের নিয়ে শুরু হচ্ছে আউটরিচ সম্মেলন।

বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, পাপুয়া নিউগিনি সরকার প্রধানদের নিয়ে এই সম্মেলনে মূলত দারিদ্র বিমোচন, টেকসই অর্থনীতি ও নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে।

এই সম্মেলনে যোগ দিতে ইতিমধ্যে জাপানের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।