জলবায়ু পরিবর্তনে বাড়তে পারে জিকার প্রকোপ

বিশ্ব উষ্ণায়ন আরও দ্রুত জিকা ভাইরাসসহ মশাবাহিত অন্যান্য ভাইরাসের বিস্তার ঘটাতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2016, 02:29 PM
Updated : 19 April 2016, 02:29 PM

ল্যাটিন আমেরিকা থেকে মশাবাহিত এ ভাইরাসটি আগামী দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা।

তাপমাত্রা বাড়তে থাকাটা অনেক দিক থেকেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য হুমকি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মরিতেজ ক্রায়েমার বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন মশা বিস্তারের পরিধি বাড়াতে ভূমিকা রাখে।”

গবেষকদের একজন অ্যানা-বেলা ফিলুক্স বলেন, “আমাদের সামনে এখন নুতন হুমকি হল, আগামী গ্রীষ্মেই জিকা ভাইরাস ইউরোপে ছড়িয়ে পড়তে পারে।”

এডিস এজিপ্টি মশা জিকা ভাইরাস বহন করে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই মশাটি ‘পীতজ্বর’ এর বিস্তার ঘটানোর জন্য পরিচিত ছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)  তথ্য মতে, গত বছর থেকে ব্রাজিল, কলাম্বিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকার অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়া জিকা ভাইরাসের বাহকও এডিস এজিপ্টি।

ওই অঞ্চলে এখন পর্যন্ত কয়েকলাখ মানুষ জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে তেমন কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। কিন্তু গর্ভবতী নারী জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তার গর্ভের শিশুর মস্তিষ্ক গঠন অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় শিশুর এ অবস্থাকে মাইক্রসেফালি বলে। যদিও জিকার সঙ্গে মাইক্রসেফালির সরাসরি সম্পর্ক এখনও প্রমাণিত নয়।

কিন্তু ব্রাজিলে জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর সেখানে মাইক্রসেফালি বা ছোট মাথার শিশু জন্মানোর হার অনেক বেড়ে গেছে।

সম্প্রতি কয়েকটি গবেষণায় জিকার সঙ্গে মাইক্রসেফালির সম্পর্ক থাকার ইঙ্গিত পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

এনডিটিভি জানায়, ২০১৫ সাল থেকে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ  ক্রায়েমারের নেতৃত্বাধীন একদল গবেষক উষ্ণ আবহাওয়ায় বিস্তারলাভ করা দুইটি পতঙ্গ নিয়ে কাজ শুরু করেছে। যার একটি এডিস এজিপ্টি  ও অন্যটি এডিস এলবোপিকটাস।

এলবোপিকটাস মশাটিও ক্রান্তীয় অঞ্চলের। যদিও ১৯৯০ এর দশক থেকে কেবল ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলেরই ২০টি দেশে এই মশা রয়েছে।

গ্রীষ্মের সময়টিতে উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে মশারা। শীতের সময় তারা থাকে না। গ্রীষ্মের উষ্ণ সময়টিতেই তাদের প্রকোপ বাড়ে।

গত দশক ধরে দেখা যাচ্ছে নতুন প্রজাতির এলবোপিকটাসের দৌরাত্ম। এ মশার প্রকোপে ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গু ও চিকুঙ্গুনিয়া রোগের বিস্তার ঘটেছে।

গবেষণাগারে দেখা গেছে, এলবোপিকটাসও জিকা ভাইরাস বহনে সক্ষম। এই মশাটির মাধ্যমে জিকা ভাইরাস ইউরোপে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

“অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে এজিপ্টি মশা নিয়মিতই দেখতে পাওয়া যায়। তাই সেখানে জিকা ছড়িয়ে পড়ার হুমকি আরো বেশি।”