কেমন ফার্স্ট লেডি হবেন মেলানিয়া ট্রাম্প?

১৯৯৯ সালে করা খুব সাধারণ এই প্রশ্নটিই ১৬ বছর পর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে পরিণত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2016, 06:13 PM
Updated : 4 Feb 2017, 04:16 AM

১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে রিফর্ম পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই সময় ট্রাম্পের বান্ধবী স্লোভেনিয়ার মেলানিয়া নাসকে (বর্তমানে স্ত্রী) ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’ এর পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি কেমন ফার্স্ট লেডি হবেন?

১৯৯৯ সালে সম্ভাবনা শূন্য হলেও বর্তমানে রিপাবলিকান দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী ট্রাম্প প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় বেশ খানিকটা এগিয়ে আছেন। অন্তত ৪ টি রাজ্যের প্রাইমারি ভোট সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে। যেগুলোর টানা তিনটিতে জিতেছেন ট্রাম্প।

এবার ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ১৮২৫ সালের পর মেলানিয়াই হবেন বিদেশি বংশোদ্ভূত প্রথম ফার্স্ট লেডি। ট্রাম্পের অভিবাসন-বিরোধী নীতির সঙ্গে মেলানিয়ার বর্তমান অবস্থা আপাত বিরোধী বলেই মত অনেকের।

তবে সেই ট্রাম্পেরই বিদেশি বংশোদ্ভুত বউ হওয়ার এ নিমর্ম পরিহাস উড়িয়ে দিয়ে মেলানিয়া বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে কাগজপত্রহীনভাবে বাস করা যে অভিবাসীদেরকে ট্রাম্প তাড়াতে চেয়েছেন তাদের সঙ্গে তার (মেলানিয়া) অবস্থাটা মোটেও এক নয়।

এমএসএনবিসি’ কে মেলানিয়া বলেন, “আমি আইন মেনে চলি। আমি কাগজপত্র ছাড়া এখানে বাস করার কথা কল্পনাও করতে পারি না। আমার ভিসা আছে।”

আর ফার্স্ট লেডি হিসাবে কেমন হবেন?  নতুন করে ফের সেই প্রশ্নে মেলানিয়ার জবাব, “আমার আচরণ হবে খুবই প্রথাগত। অনেকটা বেটি ফোর্ড অথবা জ্যাকি কেনেডির মত। আমি সবসময় তাকে (ট্রাম্পকে) সমর্থন করব।”

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা সমাবেশগুলোতে মেলানিয়াকে এভাবেই দেখা যাচ্ছে। স্বামীর পাশে শান্ত ও চুপচাপ হয়েই দাঁড়িয়ে থাকছেন তিনি।

বর্তমান ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার সঙ্গে তুলনা করলে মেলানিয়া কথা বলেনই না বলা যায়।

২০০৮ সালে বারাক ওবামার নির্বাচনী প্রচারণার সময় তীর্যক মন্তব্য করে মিশেল ওবামা তার স্বামীরই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিলেন।

একবার তিনি বলেছিলেন, “প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর এই প্রথম আমি সত্যি আমার দেশের জন্য গর্ব অনুভব করছি।”মিশেলের এই মন্তব্যের পর রক্ষণশীলরা সমালোচনার ঝড় তোলে। এমনকি তার দেশপ্রেম নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।

সেই তুলনায় মেলানিয়া স্বামীর নির্বাচনী প্রচারণায় সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বলছেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প সবচেয়ে সেরা প্রেসিডেন্ট হবেন।”

স্লোভেনিয়া বংশোদ্ভূত ৪৫ বছর বয়সী মেলানিয়া মডেল ছিলেন। তাদের নয় বছর বয়সী পুত্রের নাম ব্যারন।

১৯৭০ সালে স্লোভানিয়ার ছোট্ট শহর সেভনিকায় শৈশব কাটে তার। পরে মিলান ও প্যারিসে মডেল হিসেবে ক্যারিয়ার গড়েন তিনি।

১৯৯৬ সালে মেলানিয়া নিউ ইয়র্কে পাড়ি জমান। দুই বছর পর কিট ক্যাট ক্লাবের একটি পার্টিতে তার থেকে ২৪ বছরের বড় ট্রাম্পের সঙ্গে তার পরিচয় হয় বলে জানিয়েছে ‘দ্য গার্ডিয়ান’।

ওই সময় ট্রাম্প তার দ্বিতীয় স্ত্রী মার্লা ম্যাপলেসের থেকে আলাদা বাস করতেন। ২০০৬ সালে মেলানিয়া ও ট্রাম্প বিয়ে করেন। তাদের বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন হিলারি ও বিল ক্লিন্টন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্ত্রী হলেও মেলানিয়ার যৌক্তিক কথাই বলছেন৷ স্বামীর নির্বাচনী প্রচারে নেমেও নিজের কথা সুস্পষ্ট যুক্তিতে বলছেন তিনি৷ ট্রাম্প যেখানে প্রেসিডেন্ট হলে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঢুকতে দেবেন না বলছেন, সেখানে মেলানিয়ার মত হচ্ছে, কেউ বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে চাইলে সে সুযোগ রাখা উচিত৷

যুক্তরাষ্ট্রে এসে মেলানিয়া নাস থেকে ট্রাম্পের তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে মেলানিয়া ট্রাম্প হয়েছেন৷ ট্রাম্পের হাত ধরে  তিনি হোয়াইট হাউসবাসীও হতে পারেন বলে জল্পনা চলছে৷