রোববার সিরিয়ায় তুরস্কের অভিযান দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে। শনিবার থেকে তুরস্ক কুর্দি মিলিশিয়াদের ওপর গোলাবর্ষণ শুরু করে। সিরিয়ার যুদ্ধে জড়িত আঞ্চলিক শক্তিগুলোর চলমান অভিযানের মধ্যে তুরস্কের হামলা জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
শুক্রবার ক্ষমতাধর দেশগুলো সিরিয়ায় সীমিত আকারে যুদ্ধবিরতিতে একমত হলেও সিরিয়ার সরকারি ও বিদ্রোহী দলগুলোর পক্ষ থেকে এখনও কোনো সাড়া না মেলায় ধারণা করা হচ্ছে এ সপ্তাহে চুক্তিটি কার্যকর হবে না।
রুশ বিমান বাহিনীর সহায়তায় সম্প্রতি সিরিয়ার সেনাবাহিনী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত বেশ কয়েকটি এলাকার দখল পুনরায় ফিরে পেয়েছে। বিশেষ করে দেশটির সবচেয়ে বড় শহর আলেপ্পোর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকা পুনর্দখল তাদের জন্য সবচয়ে বড় বিজয়।
এরই মধ্যে আলেপ্পোর উত্তরের তুর্কি সীমান্তবর্তী এলাকা মেনাঘে তুরস্কের গোলাবর্ষণ জটিলতা বাড়িয়েছে। দুইদিন ধরে তুরস্ক কুর্দিস ওয়াইপিজি মিলিশিয়া নিয়ন্ত্রিত ওই এলাকায় গোলা বর্ষণ করে যাচ্ছে।
গত সপ্তাহে রুশ বিমান হামলার সহায়তায় তুরস্ক সীমান্তবর্তী মেনাঘ বিমান ঘাঁটির দখল নেয় ওয়াইপিজি মিলিশিয়ারা।
তুরস্ক সরকার বিষয়টি ভালভাবে নেয়নি। ওয়াইপিজি কে নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) অংশ বলে বিবেচনা করে তুরস্ক। গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে পিকেকে তুরস্কে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে।
তুরস্ক ওয়াইপিজি মিলিশিয়াদের ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তুরস্কের দাবি মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে ওয়াইপিজি।
‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানায়, তুরস্কের গোলার আঘাতে ওয়াইপিজি’র দুই যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।
সিরিয়া সরকার জানায়, তুরস্কের গোলাবর্ষণকে তারা বিদ্রোহীদের সরাসরি সমর্থন করা হিসেবে বিবেচনা করছে।
রুশ বিমান বাহিনীর সহায়তায় যুদ্ধে নিজেদের অবস্থান ধীরে ধীরে শক্ত করছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বাহিনী।
যদিও আন্তর্জাতিক অঙ্গন রশিয়াকে সিরিয়ায় হস্তক্ষেপ বিশেষ করে আসাদ বিরোধী বিদ্রোহিীদের ওপর হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
জাতিসংঘের উদ্যোগে সিরিয়ায় শান্তি আলোচনা শুরু হলেও আলেপ্পোর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সরকারি বাহিনীর অভিযানের মুখে তা স্থগিত হয়ে যায়।
তবে সম্প্রতি মিউনিখে হওয়া সিরিয়া বিষয়ক চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ফোনালাপ হয়েছে বলে দাবি করেছে ক্রেমলিন।
ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সিরিয়ায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে ‘সহযোগিতা জোরদার’ করা নিয়ে উভয় প্রেসিডেন্ট টেলিফোনে আলাপ করেছেন।
উভয়ই বিষয়টিতে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে নিয়েছেন বলেও জানায় ক্রেমলিন।
তবে রাশিয়া ইসলামিক স্টেট (আইএস) সহ সিরিয়ার অন্যান্য জঙ্গি দলগুলোর উপর বোমা বর্ষণ অব্যাহত রাখবে বলেও বিবৃতিতে স্পষ্ট করে জানানো হয়।
ওবামা ও পুতিন কবে আলাপ করেছেন সে বিষয়ে কিছু জানায়নি ক্রেমলিন।