‘পূর্ব-পশ্চিম সম্পর্ক নতুন স্নায়ুযুদ্ধে’

পশ্চিমারা বিশ্বকে ৫০ বছর আগের পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে অভিযোগ করে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, “পূর্ব-পশ্চিম সম্পর্ক নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধে পড়েছে।”

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2016, 02:02 PM
Updated : 14 Feb 2016, 05:02 PM

ইউক্রেইনে সংঘর্ষ বাড়ছে এবং সেখানকার রুশ-সমর্থিত বিদ্রোহীরা আবারও ভারি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠছে বলে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা হুঁশিয়ার করার পর এর জবাবে মেদভেদেভ ওইকথা বলেন।

নেটোকে রাশিয়ার প্রতি বৈরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। এতে করে মস্কো ইউক্রেইনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখলের প্রায় দু’বছরেও পূর্ব-পশ্চিম সম্পর্কে শান্তি প্রচেষ্টায় তেমন কোনও অগ্রগতি না হওয়ারই লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে।

মিউনিখের নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রশ্ন তুলে মেদভেদেভ বলেছেন,“অনেক সময় আমার মনে হয় এটা কি ২০১৬ সাল নাকি আমরা ১৯৬২ সালে আছি?”

মিন্সকে এক বছর আগে হওয়া চুক্তি বাস্তবায়নের আওতায় রাশিয়া থেকে  নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পট প্রস্তুত হলে এবং গতবছরের শেষের দিকে সহিংসতা কিছুটা থিতিয়ে এলে তাড়াতাড়ি সংঘর্ষের অবসান হওয়ার ব্যাপারে আশা সঞ্চার হয়।

তবে  ইউক্রেইন পরিস্থিতি তদারককারী ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংগঠনের (ওএসসিই) প্রধান ল্যামবার্টো জনিইর বলেছেন, পরিস্থিতি আবারও জটিল হয়ে উঠেছে।

মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি রয়টার্সকে বলেন, “আমরা ঘটনার ঘনঘটা দেখতে পাচ্ছি। যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন দেখছি। যুদ্ধের  সম্মুখ সারিতে ভারি অস্ত্রের আনাগোনা দেখছি... ব্যবহার হচ্ছে রকেট লাঞ্চার, গোলা।”

মেদভেদেভ ইউক্রেইন পরিস্থিতির অবনতির জন্য কিয়েভকে দোষারোপ করে বলেছেন, তারা মস্কোর ঘাড়ে দোষ চাপাতে চাইছে। পূর্ব ইউক্রেইনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শিল্প এলাকায় কিয়েভ অবিরাম গোলা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর  ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বন্দ্ব এবং উত্তেজনা চলে আসছে। রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল এবং পূর্ব ইউক্রেইনে রুশ বিদ্রোহীদেরকে মস্কোর সমর্থন দেওয়া নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে সৃষ্ট উত্তেজনা স্নায়ুযুদ্ধের শামিল। রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেইনের বিদ্রোহীদের অস্ত্র দিচ্ছে বলে অভিযোগ পশ্চিমাদের। কিন্তু রাশিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

এর মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সর্বশেষ দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে সিরিয়া নিয়ে। রাশিয়া সমর্থন করছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ নেটো জোট সমর্থন করছে আসাদ বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে।

সিরিয়ার রুশ বিমান হামলায় বেসামরিক প্রাণহানির অভিযোগ  অস্বীকার করেছেন রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেডভিয়েডেফ।

তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি রাশিয়াকে সিরিয়ায় বিমান হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। রাশিয়া বেশিরভাগ হামলাই সিরিয়ার  আসাদ বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।