আলেপ্পোকে ঘিরে ফেলে রাক্কার দিকে নজর সিরীয় বাহিনীর

রুশ বিমান হামলার ছত্রছায়ায় সিরিয়ার বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর নিকটবর্তী বিদ্রোহী অধিকৃত এলাকার আরো কিছু অংশে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী।

>>রয়টার্স
Published : 14 Feb 2016, 07:49 AM
Updated : 14 Feb 2016, 07:49 AM

এ সাফল্যের পর সরকারি বাহিনী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শক্ত ঘাঁটি রাক্কা প্রদেশের দিকে নজর দিয়েছে ।

এ পরিস্থিতিতে শনিবার রাশিয়া বলেছে, সিরিয়ায় একটি অস্ত্রবিরতির পরিকল্পনা সফল হওয়ার চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতির পরিকল্পনা নিয়ে জার্মানির মিউনিখে আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে। অস্ত্রবিরতির বিষয়ে পরাশক্তিগুলো প্রাথমিকভাবে সম্মত হলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ফ্রান্সের অভিযোগে বিভক্তি আবার সামনে চলে এসেছে।

বেসামরিক মানুষের উপর বোমা হামলার ফরাসি অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিও প্রায় একই অভিযোগ করেন। সিরিয়ার ‘বৈধ বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর উপর’ এবং বেসামরিকদের উপর রাশিয়া বোমা ফেলছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

অস্ত্রবিরতি চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে রাশিয়াকে তার লক্ষ্য অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন তিনি।

গেল সেপ্টেম্বরে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে রাশিয়া যোগ দেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। সম্প্রতি জাতিসংঘ সিরিয়া বিষয়ক শান্তি আলোচনা আবার শুরু করার তাগিদ দেওয়ার সময় থেকে লড়াই আরো তীব্র হয়ে ওঠে। যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াইয়ের তীব্রতা বাড়ার মুখে চলতি মাসের শুরুতে বিশ্ব সংস্থাটির উদ্যোগে শুরু হওয়া শান্তি আলোচনা শুরুর প্রায় পরপরই স্থগিত হয়ে যায়।    

শনিবার সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আজাজ শহরে কুর্দি ওয়াইপিজি বেসামরিক বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করেছে তুর্কি বাহিনী।

সম্প্রতি ওয়াইপিজি সিরিয়ার যে এলাকাগুলো দখল করেছে সেখান থেকে গোষ্ঠীটির প্রত্যাহার দাবি করেছেন তুর্কি প্রধানমন্ত্রী আহমেত দাভুতোগলু।

তুরস্ক ও সিরীয় কুর্দিদের মুখোমুখি অবস্থান থেকে পিছিয়ে গিয়ে সিরিয়ার বিশাল অংশ দখল করে রাখা ‘সবার জন্য হুমকি’ আইএসের দিকে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

ওদিকে সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সৌদি আরব স্থল বাহিনী পাঠানোর আগেই আইএস অধিকৃত প্রদেশ রাক্কার দিকে মনোযোগ দিয়েছে সিরীয় সরকারি বাহিনী।

২০১৪ সালের পর প্রথমবারের মতো রাক্কার দিকে অগ্রসর হয়েছে তারা।

সিরীয় সামরিক বাহিনীর এক সূত্র জানিয়েছে, গেল দুইদিনে সিরীয় সেনাবাহিনী হামা ও রাক্কা প্রদেশের মধ্যবর্তী সীমান্তের কয়েকটি অবস্থান দখল করেছে এবং আরো এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। 

তিনি বলেন, “রাক্কার দিকেই পরবর্তী অভিযান চালানো হবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণভাবে বললে, তাবকা এলাকার দিকে যাত্রা শুরু করার মাধ্যমে রাক্কার যুদ্ধক্ষেত্র উন্মুক্ত হল।”

তাবকায় একটি বিমান ঘাঁটি আছে। দুই বছর আগে আইএস এলাকাটির দখল নিয়েছিল। সূত্র জানিয়েছে, সিরীয় বাহিনী ঘাঁটিটির ৩৫ কিলোমিটারের মধ্যে প্রবেশ করেছে।

এর মধ্যে সরকারি বাহিনীগুলো আলেপ্পো পুনর্দখল করে নিয়ে শহরটির উত্তরে তুর্কি সীমান্ত বন্ধ করে দিলে, বিদ্রোহীদের কঠিন চাপে ফেলে দেবে দামেস্ক। রুশ বিমান হামলা শুরু হওয়ার আগে এই বিদ্রোহীরাই লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল।

এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অবস্থান আরো শক্ত হয়ে বিদ্রোহীদের পতনের যে রাস্তা উন্মুক্ত হল আরো প্রশস্ত হতে পারে।