সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি সৌদির

সিরিয়ায় সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে তুরস্কের ইনজিরলিক সামরিক ঘাঁটিতে সেনা ও যুদ্ধ বিমান পাঠানো শুরু করেছে সৌদি আরব।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2016, 03:26 PM
Updated : 13 Feb 2016, 03:49 PM

শনিবার এক বিবৃতিতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসগলু সৌদি আরবের সেনা পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, “সৌদি আরব যুদ্ধবিমান ও সেনা পাঠানোর প্রস্তুতির কথা জানিয়ে দায়েশকে (ইসলামিক স্টেটকে আরবিতে দায়েশ বলে) রুখতে তাদের দৃঢ়প্রতিজ্ঞার কথা ঘোষণা করেছে।”

“জোটের প্রতিটি বৈঠকে আমরা দায়েশের মত জঙ্গি দলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যাপক ফলপ্রসূ কৌশল অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সব সময় জোর দিয়েছি। যদি এ ধরণের কৌশল অবলম্বন করা হয় তাহলে তুরস্ক ও সৌদি আরব হয়তো সম্মুখ অভিযান শুরু করবে।”

জার্মানির এক পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের বলেন, সিরিয়ায় রাশিয়ার হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে বাশারের ক্ষমতায় থাকা দীর্ঘায়িত হতে দেওয়া হবে না।

“ভবিষ্যতে কোনো বাশার আল-আসাদ থাকবে না।”

যদিও ‘গোটা দেশকে’ বিদ্রোহীদের কবলমুক্ত করে আবার নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট আসাদ।

এদিকে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ম্যানেুয়েল ভালস রাশিয়াকে সিরিয়ার বেসামরিক মানুষের উপর বোমা হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শান্তি আনার চাবিকাঠি হল বেসামরিক মানুষদের উপর বোমা হামলা বন্ধ করা।

জবাবে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, “সিরিয়ার বেসামরিক মানুষের উপর আমাদের বোমা হামলার প্রমাণ কারো কাছে নেই। তারপরও সবাই আমাদের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলছে।”

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের পক্ষে গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে রাশিয়া সেখানে বোমা হামলা শুরু করে।

অন্যদিকে সৌদি আরব ও তুরস্ক রাজনৈতিকভাবে আসাদ বিরোধী। দেশ দুইটি সিরিয়ার বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী দলকে অস্ত্রের যোগানও দিচ্ছে।

এখন নতুন করে সম্মুখ যুদ্ধে সেনা পাঠানোর সৌদি আরবের প্রস্তাব আরও একটি বিশ্ব যুদ্ধ উসকে দিতে পরে বলে সতর্ক করেছেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেদভেদেভ।

“একজন সম্মুখ সমরাভিযান শুরু করলে অন্যরাও তাতে অংশ নেবে এবং এটা বিশ্ব যুদ্ধে রূপ নেবে।”

“আমেরিকা ও আমাদের আরব সঙ্গিদের অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে তারা একটি স্থায়ী যুদ্ধ চায় নাকি চায় না।”

প্রায় পাঁচ বছর ধরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে আইএস’র মত জঙ্গি দল দেশটিতে শেকড় গেড়ে শক্ত অবস্থানে চলে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোটে এক ডজনের বেশি দেশ সিরিয়া ও ইরাকে আইএস’র বিরুদ্ধে বিমান হামলায় অংশ নিচ্ছে।

রাশিয়ারও দাবি তারা সিরিয়ায় অবস্থিত আইএস’র বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা দেশ এবং আরব দেশগুলোর দাবি রাশিয়া আইএস দমনের নামে আসলে আসাদের পক্ষে বিদ্রোহীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। ইরানও আসাদকে সাহায্য করছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘের উদ্যোগে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ অবসানে ‘শান্তি আলোচনা’ শুরু হয়েছিল। কিন্তু বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পোতে আসাদ বাহিনী অভিযান শুরু করলে ওই আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়।