মুয়াফাকা আলাবাস ও অসীম আলফ্রহাদ নামে অভিযুক্ত দুজনই সিরীয়। মানবপাচার ও হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ ৩৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
২০১৪ সালে সিরিয়ার কোবানি শহরে আইএস যোদ্ধাদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই শুরুর পর এক পর্যায়ে পালিয়ে তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছিল আয়লানের পরিবার। সেখানে মানবেতর জীবনযাপন থেকে মুক্তির আশায় রাতের আঁধারে নৌকায় চড়ে তুরস্কের বোদরাম থেকে গ্রিসের কস দ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল তারা। পথে নৌকা ডুবে মা ও ভাই গালিপসহ ভেসে যায় তিন বছরের আয়লান, বেঁচে যান তার বাবা আব্দুল্লাহ কুর্দি।
গত বছর ২ সেপ্টেম্বর বোদরাম সৈকতে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা আয়লানের মৃতদেহের ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এলে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে; প্রশ্নের মুখে ফেলে ইউরোপীয় শরণার্থী নীতিকে। বিশ্বব্যাপী সমালোচনা-প্রতিবাদের মুখে সিরীয় শরণার্থীদের আশ্রয়ের বিষয়ে নমনীয় হয় ইউরোপ।
ইন্ডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ওই বোদরাম দ্বীপেই বৃহস্পতিবার মুয়াফাকা ও অসীমের বিচার শুরু হয়েছে। ‘গুরুতর অবহেলার কারণে’ আয়লানসহ পাঁচজনের মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
আয়লানের বাবা আব্দুল্লাহ জানান, সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসার পর শরণার্থী জীবনে কানাডায় অভিবাসনের চেষ্টা করেছিলেন তারা। কানাডা প্রবাসী বোনের স্পন্সরে অভিবাসনের ওই আবেদন নাকচ করে দেয় কানাডা কর্তৃপক্ষ।
এরপর পরিবারসহ গ্রিসে নিয়ে যাওয়ার জন্য দুই দফায় পাচারকারীদের টাকা দেন তিনি। কিন্তু সে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
তৃতীয় দফায় গভীর রাতে একটি ছোট নৌকায় উঠে পড়েন। যাত্রা শুরুর পরপর নৌকায় পানি উঠতে শুরু করলে লোকজন আতঙ্কে উঠে দাঁড়ানোর পর সেটি ডুবে যায়।
“আমি স্ত্রীর হাত ধরে ছিলাম। কিন্তু হাত ফসকে যায় আমার সন্তান। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছিলাম নৌকার সঙ্গে সেঁটে থাকতে। কিন্তু নৌকা ডুবে যাচ্ছিল। চারিদিক ছিল অন্ধকার। সবাই চেঁচামেচি করছিল।”