জার্মানিতে ৯৩ বছর বয়সী নাৎসি রক্ষীর বিচার শুরু

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে নাৎসি অধিকৃত পোল্যান্ডের আউৎসুইৎতজ বন্দিশালায় রক্ষী হিসেবে কাজ করা ৯৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তির বিচার জার্মানিতে শুরু হয়েছে।

>>রয়টার্স
Published : 11 Feb 2016, 09:19 AM
Updated : 11 Feb 2016, 09:19 AM

কনসেনট্রেশন ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত নাৎসি বন্দিশালাগুলোর মধ্যে আউৎসুইৎতজ ছিল সবচেয়ে কুখ্যাত। এই বন্দিশালায় ১১ লাখেরও বেশি ইহুদিকে হত্যা করেছিল নাৎসি বাহিনী।

বয়োবৃদ্ধ রেইনহোল্ড হ্যানিংয়ের বিরুদ্ধে অন্ততপক্ষে এক লাখ ৭০ হাজার মানুষকে হত্যায় সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়েছে ।

তিনি হচ্ছেন এ ধরনের অভিযোগের মুখে থাকা অত্যন্ত বয়োবৃদ্ধ চারজনের প্রথমজন যার বিচার শুরু হল।

নব্বই বছরের বেশি বয়সী এই চারজনের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। 

বৃহস্পতিবার জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় ডেটমোল্ড শহরে হ্যানিংয়ের বিচার শুরু হয়।

১৯৪২ সালে ২০ বছর বয়সী হ্যানিং আউৎসুইৎতজ বন্দিশিবিরে রক্ষী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন জার্মানির সরকারি আইন কর্মকর্তারা। ১৮ বছর বয়সে তিনি স্বেচ্ছায় নাৎসিদের এসএস বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে তিনি পূর্ব ইউরোপে লড়াইয়ে অংশ নেন।    

১৯৪২ সালের জানুয়ারিতে তাকে আউৎসুইৎতজ কারাগারে বদলি করা হয়। এখানে ১৯৪৪ সালের জুন পর্যন্ত তিনি রক্ষী হিসেবে কাজ করেন।

ডর্টমন্ডের আইন কর্মকর্তার দপ্তর হ্যানিংকে অভিযুক্ত করে। এছাড়া হাঙ্গেরি, ইসরায়েল, কানাডা, গ্রেট ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি তার বিরুদ্ধে ৩৮টি যৌথ অভিযোগ এনেছে।

আউৎসুইৎতজ বন্দিশিবিরে ওই সময়ের প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগেরও মুখোমুখি হতে হবে তাকে। এদের মধ্যে একজন এর্না দ্য ভ্রিস। ১৯৪৩ সালে ২৩ বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে তাকে আউশভিজ্জে পাঠানো হয়। ইহুদি মা, প্রোটেস্ট্যান্ট পিতার সন্তান ভ্রিসকে ‘ইহুদি দোঁআশলা’ বিবেচনায় গ্যাস চেম্বারে না পাঠিয়ে শ্রমশিবিরে পাঠানো হয়। 

বিচার শুরু আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, “আমি বেঁচে আছি, কিন্তু আমার মাকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে তা এখনও জানিনা। তিনি শেষ যা বলেছিলেন তা হল, “তুমি বেঁচে থাকবে আর আমাদের কী হয়েছে তা বলবে।”

“আমি ঘৃণাবোধ করছি না, কিন্তু এই লোকটির বিচার হচ্ছে দেখার পর ন্যায় বিচার পেয়েছি এমন অনুভব করছি। আমার মা যখন মারা যায় এই লোক তখন সেখানে কাজ করত।” –বলেন ভ্রিস।