বুধবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্ত জানান।
২০১৪ সালের জুলাই থেকে উত্তর কোরিয়ার পণ্যবাহী কোন জাহাজ বন্দরে ভিড়তে নিষেধাজ্ঞা চালু করেছিল জাপান। একমাত্র মানুষ্যবাহী জল-জাহাজ ভিড়তে পারত।
কিন্তু বুধবার জাপান সরকারের সিদ্ধান্তের পর এখন থেকে তাতেও ছেদ ঘটল।
প্রধানমন্ত্রী আবে বলেন, আমরা অনেক কিছু বলার পরও উত্তর কোরিয়া তাদের একগুঁয়েমি দেখিয়ে আসছে। জাতিসংঘ নীতিমালা লঙ্ঘন করে তারা যে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে তা ঘোরতর অন্যায়। আর এজন্য আমরা এককভাবে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, এখন থেকে উত্তর কোরিয়ার কোনও নাগরিক জাপানে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি জাপান থেকে কোন নাগরিক কিংবা জাপানি নন এমন কেউ উত্তর কোরিয়া থেকে সফর শেষে জাপানে যেতে পারবে না।
উত্তর কোরিয়ার মানুষ বহনকারী কোনও জল-জাহাজ জাপানের কোন বন্দরে ভিড়তে পারবে না। এমনকি উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত দিয়ে চলে আসা তৃতীয় কোনও দেশের জাহাজের প্রতি নিষেধাজ্ঞা অটুট থাকবে।
গত রোববার বিশ্বনেতাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে উত্তর কোরিয়া কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর নামে একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে বলে জাপান ও তার মিত্র দেশ দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে আসছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের পর শুধু নামমাত্র নিন্দা জানিয়েই সন্তুষ্ট ছিল না তারা।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেন।
সেখানেই উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আসে। আর তার একদিনের মধ্যে জাপানের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কচ্ছেদ ঘটল।
শিনজো আবে সাংবাদিকদের বলেন, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নিতে আমরা আন্তরিকভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহায়তা করে যাব এবং তা কার্যকর করতে জাপান সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।
তবে কঠোর ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত কবে থেকে কার্যকর হচ্ছে তা শিনজো আবে নিশ্চিত করে বলেননি।
জাপানের মূখ্য সচিব ইয়াশিদা সুগা বলেছেন, সরকার খুব শিগগির এ সিদ্ধান্তগুলো সংসদে উত্থাপন করবে। আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহে সংসদে বিল পাশের মাধ্যমেই উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ বৈধতা পাবে।
তিনি আরও বলেন, এটি সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত যাতে করে বিশ্ব সম্প্রদায় অনুপ্রাণিত হয়ে দ্রুত উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান দাঁড় করায়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে জাপান ও উত্তর কোরিয়া দুই মেরুতে অবস্থান নিতে শুরু করে। পারমাণবিক শক্তি দেখাতে বরাবরই তৎপর ছিল পিয়ংইয়ং।
টোকিওর বেশ কিছু দ্বিপক্ষীয় চুক্তির পরও তা কাজে দেয়নি। জাপানের আহ্বানকে উড়িয়ে দিয়ে উত্তর কোরিয়া শক্তি প্রদর্শন করে চলেছে।
আর সম্পর্কেও উত্তাপ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শীতলতার পথে হাঁটছে শিনজো আবের নেতৃত্বাধীন জাপান সরকার।