যুক্তরাজ্যে দলবেঁধে ধর্ষণে ১২ জনের দণ্ড

যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারে এক কিশোরীকে বছরব্যাপী যৌন নির্যাতনের দায়ে ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2016, 03:33 PM
Updated : 9 Feb 2016, 03:33 PM

দণ্ডিতদের সবাই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বলে ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ার পুলিশের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এই চক্রের হোতা আরিফ চৌধুরী আদালতে উপস্থিত না থাকায় তার দণ্ড ঘোষণা হয়নি। ২০১২ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে।

ব্রাডফোর্ড ক্রাউন কোর্ট সোমবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করে।

ব্রাডফোর্ডের কাইলি শহরে ১৩ বছর বয়স থেকে শ্বেতাঙ্গ ওই কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে ১১ জনকে দণ্ড দেয় আদালত।  অন্যজনের দণ্ড হয়েছে তাকে যৌন নিপীড়নে।

দণ্ডিতরা হলেন- খালিদ রাজা মাহমুদ (৩৪), তৌকির হোসাইন (২৩), ইয়াসির কবির (২৫), সুফিয়ান জিয়ারাব (২৩), বিলাল জিয়ারাব (২১), ইসরার আলী (১৯), নাসির খান (২৪), জাইন আলী (২০), ফয়সাল খান (২৭), সাকিব ইউনিস (২৯), হোসাইন সরদার (১৯) ও মোহাম্মদ আকরাম (৬৩)।

এদের সবাইকে সাড়ে তিন বছর থেকে সর্বোচ্চ ২০ বছর কারাগারে কাটাতে হবে। এদের মধ্যে আকরামের পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে মেয়েটিকে যৌন নিপীড়নে।

এছাড়া মাহমুদের ১৭ বছর, তৌকিরের ১৮ বছর, ইয়াসিরের ২০ বছর, সুফিয়ানের ১৫ বছর, বিলালের ১২ বছর, ইসরার সাড়ে তিন বছর, নাছিরের ১৩ বছর, জাইনের আট বছর, ফয়সালের ১৩ বছর, সাকিবের ১৩ বছর এবং হোসাইনের ছয় বছর কারাদণ্ড হয়েছে।

আদালতে শুনানিতে ২০১১ ও ২০১২ সালে ১৩ মাস ধরে ওই স্কুলশিক্ষার্থীর ওপর সংঘটিত যৌন নির্যাতনের চিত্র উঠে আসে।

একটি আন্ডারগ্রাউন্ড কার পার্ক ও চার্চের কবরস্থান ছাড়াও একাধিক জায়গায় তাকে ধর্ষণ করা হয়। ওই সময়ে ৭০ বারের বেশি মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

মাদক ব্যবসায়ী আরিফ মেয়েটিকে প্রথমে ধর্ষণের পরে বন্ধুদের কাছে তাকে নিয়ে আসে বলে ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়। এ সময় আরিফের বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর।

১৩ বছর বয়সে মেয়েটি মাদক চোরাকারবারিদের খপ্পরে পড়ে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা না করা এবং পুলিশের কাছে ধর্ষিত হওয়ার ঘটনা খুলে বলার সিদ্ধান্ত নেয়।

আরিফ তাকে প্রায়ই মারধর করত এবং বছরব্যাপী অন্যদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেছিল বলে জানান তিনি।

১২ জনের দণ্ড ঘোষণার সময় বিচারক রজার টমাস বলেন, “তার বয়স ছিল ১৩ বা ১৪ বছর, যখন তোমরা ১২ জন তার থেকে এই ধরনের ভয়াবহ ও নিষ্ঠুর যৌন সুবিধা নিয়েছ।”

তাদের কার্যক্রমকে ঘৃণ্য মন্তব্য করে তিনি বলেন,  তার অনেক বছরের ফৌজদারি অপরাধের বিচারে এ ধরনের ঘটনা  বিরল।