এশিয়ায় অচিরেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা গড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র

রকেট উৎক্ষেপণের জন্য উত্তর কোরিয়াকে শায়েস্তা করতে এশিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ার তোড়জোড় শুরু করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2016, 03:35 PM
Updated : 8 Feb 2016, 03:56 PM

এতে করে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে আরও টানাপোড়েন সৃষ্টি হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চীনের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্কও। এমনটিই মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

রোববার মহাকাশে একটি রকেট উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির দাবি, তারা পৃথিবীর কক্ষপথে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছে।

তবে প্রতিবেশী দেশগুলোসহ যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর আড়ালে উত্তর কোরিয়া আসলে তাদের আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছে। এই প্রযুক্তি পরে তারা পরমাণু অস্ত্রের ক্ষেত্রে ব্যবহার করবে বলেও আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদেশগুলোর।

এর আগে ৬ জানুয়ারি পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। তারপর থেকেই দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান দেশটির কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। ওই সময় ওয়াশিংটন এশিয়ার এই দুই মিত্রদেশকে সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া এরই মধ্যে বলেছে, তারা কোরিয়া উপদ্বীপে উন্নত প্রযুক্তির ‘টার্মিনাল হাই আলটিচিউড এরিয়া ডিফেন্স সিস্টেম’ (টিএইচএএডি) ‍গড়ে তোলা নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা যত দ্রুত সম্ভব শুরু করবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক পার্টনার চীন। তাই চীন নাখোশ হতে পারে আশঙ্কায় দক্ষিণ কোরিয়া এতদিন ওই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় তেমন আগ্রহ দেখায়নি।

কিন্তু উত্তর কোরিয়ার গত মাসের পারমাণবিক পরীক্ষার পর খুব শিগগিরই আবার দেশটির  রকেট উৎক্ষেপণ নিয়ে উদ্বিগ্ন দক্ষিণ কোরিয়া এখন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা নিয়ে আলোচনায় উদ্যোগী হয়ে উঠতে পারে, বলছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই বলেছে, টিএইচএএডি স্থাপন করা হলে এর লক্ষ্য হবে কেবলমাত্র উত্তর কোরিয়াই।

চীন টিএইচএএডি ব্যবস্থা গড়ার সম্ভাবনার খবরে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে।  কারণ, সামরিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, টিএইচএএডি একবার স্থাপিত হলে চীনের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এই ব্যবস্থার নজরদারির আওতায় আসবে। ফলে বিনষ্ট হবে চীনের জাতীয় নিরাপত্তা। চীনের রাষ্ট্রীয় পত্রিকার প্রকাশিত গ্লোবাল টাইমস ট্যাবলয়েডের সম্পাদকীয়তে এ নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করা নিয়ে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, বেইজিং এ বিষয়ে সিউল ও ওয়াশিংটনকে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মণ্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বলেন, “যখন বিষয়টি নিজেদের নিরাপত্তার, তখন এক দেশের অন্য দেশের নিরাপত্তার স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত করা উচিত না।”