সিরিয়া নিয়ে রাশিয়া-তুরস্কের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

সিরিয়ায় সামরিক অভিযান চালানোর জন্য তুরস্ক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে রাশিয়া।

>>রয়টার্স
Published : 5 Feb 2016, 07:57 AM
Updated : 5 Feb 2016, 07:57 AM

অপরদিকে সিরিয়ায় নিজেদের করা ‘অপরাধ’ থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিতে রাশিয়া এসব কথা বলছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছে তুরস্ক।

রুশ বিমান হামলার সমর্থনে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী শিগগিরই আলেপ্পো শহর ঘিরে ফেলবে, সিরীয় সেনাবাহিনীর এক সূত্রের এমন খবরের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাশিয়া-তুরস্ক এসব পাল্টাপাল্টি অভিযোগ জানায়।   

সামরিক অভিযানের কারণে আলেপ্পোবাসীরা ‘অনাহারের’ মুখে পড়েছে অভিযোগ করে তুরস্ক বলেছে, নিজের নিরাপত্তা রক্ষায় যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার তাদের আছে। এতে পাঁচ বছর ধরে চলা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত দেখা দিচ্ছে।

ইতোমধ্যে সৌদি আরব জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট সিদ্ধান্ত নিলে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে স্থল অভিযানে অংশ নিতে তারা প্রস্তুত আছে।

দুই বছরের মধ্যে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ অবসানে প্রথম শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার পর বুধবার তা স্থগিত করেছে জাতিসংঘ। গৃহযুদ্ধ না থেমে তা আরো তীব্র হয়ে ওঠায় প্রথম থেকেই আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল।

তারপরও বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন বলেছে, চলতি মাসের শেষ দিকে শান্তি আলোচনা আবার শুরু হবে এ আশা করছেন তারা।

আর ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আলোচনা আবার শুরু হবে বলে নিজেদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে রাশিয়া।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের কারণে সৃষ্ট শরণার্থী সঙ্কট নিয়ে আলোচনার জন্য লন্ডনে মিলিত হয়েছেন দাতারা। সেখানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন শরণার্থীদের মানবিক প্রয়োজন মেটাতে আগামী চার বছরে ১১ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহের ঘোষণা দিয়েছেন। 

এই সম্মেলনে তুরস্ক বলেছে, রুশ বিমান হামলা থেকে বাঁচতে আলেপ্পো থেকে ৭০ হাজারেরও বেশি শরণার্থী তাদের সীমান্তের দিকে রওয়ানা হয়েছেন।

অনলাইনে প্রকাশিত ফুটেজে কয়েকশ মানুষ, যাদের অধিকাংশই নারী, শিশু ও বৃদ্ধ, তুরস্কের অনুকপিনার সীমান্ত গেটের দিকে কম্বল ও খাবার পিঠে নিয়ে এগিয়ে যেতে দেখা গেছে।

চার মাসের রুশ বিমান হামলায় সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের দিকে ঝুঁকে গেছে। মস্কোর সহায়তার পাশাপাশি লেবাননের হিজবুল্লাহ গেরিলারা এবং ইরানি যোদ্ধারাও আসাদ বাহিনীকে সহায়তা করছে।

এদের সবার সমর্থনে সিরীয় সেনাবাহিনী দেশটির পশ্চিম রণাঙ্গণে একের পর এক সাফল্য পেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, “সিরিয়ার ভূখণ্ডে অভিযান চালানোর লক্ষ্যে তুর্কি সশস্ত্র বাহিনীগুলো গোপনে প্রস্তুতি নিচ্ছে, এ ধরনের ক্রমবর্ধমান ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।”

এ পর্যায়ে সিরিয়ায় তুরস্কের যে কোনো ধরনের অভিযানে রাশিয়ার সঙ্গে নেটো সদস্য দেশটির সরাসরি সংঘর্ষ শুরু হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

তুর্কি প্রধানমন্ত্রী আহমেত দাভুতোগলুর দপ্তরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, “রুশরা সিরিয়ায় করা তাদের অপরাধগুলো ঢাকতে চাইছে।”

“ইতোমধ্যেই সিরিয়ার দখলদারী দেশ হিসেবে তারা বেসামরিকদের ওপর চালানো তাদের হামলাগুলো থেকে মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করছে। নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার সব ধরনের অধিকার তুরস্কের আছে।” –বলেন ওই কর্মকর্তা।