অভিযোগের প্রমাণ দিন: পুতিনকে এরদোয়ান

ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে তেল বাণিজ্য রক্ষার জন্যই তুরস্ক রুশ যুদ্ধবিমান  ভূপাতিত করেছে - রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এ অভিযোগ প্রমাণ করতে বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোয়ান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2015, 01:41 PM
Updated : 1 Dec 2015, 03:44 PM

তিনি বলেন, “আপনি কোনো অভিযোগ তুললে অবশ্যই আপনার উচিত সেটি প্রমাণ করা। আপনার কাছে কোনো তথ্য থাকলেও তা প্রকাশ করা উচিত। আমরাও তথ্যগুলো দেখতে চাই।”

তুর্কি বাহিনীর যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার জবাবে পুতিন দাবি করেন, আইএসের দখলে থাকা তেলক্ষেত্রগুলো থেকে তেল সরবরাহ ঠিক রাখতেই তুরস্ক একাজ করেছে। তিনি তুরস্কের এ পদক্ষেপকে ‘মহাভুল’ বলেও উল্লেখ করেন।

এর প্রতিক্রিয়ায় এরদোয়ান বলেন, পুতিন তার অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করবেন।

আর অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকেও একই কাজ করার পরামর্শ এরদোয়ান দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

গত ২৪ নভেম্বর তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে তুর্কি জঙ্গি বিমান গোলা ছুড়ে রাশিয়ার একটি বোমারু বিমান ভূপাতিত করে।

তুরস্কের দাবি, রুশ বিমানটি তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল এবং  সতর্ক করার পরও বিমানটি সরে না যাওয়ায় সেটিকে ভূপাতিত করা হয়। অবশ্য আকাশসীমা লঙ্ঘনের স্থায়িত্ব ১৭ সেকেন্ডের বেশি ছিল না বলেও তুর্কি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

অপরদিকে, রাশিয়ার দাবি, তাদের বিমান তুরস্কের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি। এমন কী তুর্কি কর্তৃপক্ষ বিমানটি ভূপাতিত করার আগে কোনো সতর্ক সঙ্কেতও দেয়নি।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ ঘটনাকে ‘পিঠে ছুরি মারা’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে পুতিন বর্তমানে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আছেন।

সেখানে সোমবার তিনি বলেন, “সবদিক বিবেচনায় আমরা মনে করতে পারি, তুরস্ক তেল সরবরাহ  রক্ষার স্বার্থেই আমাদের বিমান ভূপাতিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।”আইএসের তেল তুর্কি অঞ্চলেই পাচার হচ্ছে এবং এর সপক্ষে রাশিয়ার কাছে অনেক তথ্য আছে বলেও দাবি করেন তিনি।

তুরস্ক আইএসের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে। একইসঙ্গে তুর্কি সরকার বলেছে, তারা যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ঘটনায় ক্ষমা চাইবে না।

ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার বলেছে, ভূপাতিত রুশ বিমানটি তুরস্কের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এলিজাবেথ ট্রুডেউ’র বরাত দিয়ে সিনহুয়া বার্তা সংস্থা জানায়, “তুরস্ক ও আমাদের নিজস্ব উৎস থেকে যে সব তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে সেগুলো রুশ বিমানের তুরস্কের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।”

“আমরা এও জানি তুরস্কের আকাশসীমায় প্রবেশের আগে রুশ বৈমানিকদের বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হয়, কিন্তু তাদের কাছ থেকে তুরস্ক কোনো সাড়া পায়নি।”

আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের জন্য তুরস্ক ও রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ‍যুক্তরাষ্ট্র।

বিমান ভূপাতিত করার পর ক্ষুব্ধ রাশিয়া তুরস্কের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।