আইএসের তেলই বিমান ধ্বংসের কারণ: পুতিন

ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে তেল বাণিজ্য রক্ষার জন্যই তুরস্ক রুশ বিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2015, 04:16 AM
Updated : 1 Dec 2015, 04:16 AM

পাশাপাশি বিমান ভূপাতিত করার ঘটনাকে ‘মহাভুল’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি।

বিবিসি বলছে, প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেয়া পুতিন সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে  বলেন, “সবদিক বিবেচনায় আমরা মনে করতে পারি, তুরস্ক তেল সরবরাহ ব্যবস্থা রক্ষার স্বার্থেই আমাদের বিমানকে ভূপাতিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।”

তিনি আরো বলেন, রাশিয়ার কাছে অনেক তথ্য রয়েছে যা প্রমাণ করছে, আইএসের তেল তুর্কি অঞ্চলেই পাচার হচ্ছে।

আইএসের সঙ্গে কোনো সম্পর্কের কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে তুরস্ক।

২৪ নভেম্বর সিরিয়ায় একটি রুশ বিমানকে তুর্কি যুদ্ধবিমানগুলো গুলি করে ভূপাতিত করে। ওই ঘটনায় একজন পাইলট নিহত হন। অপর পাইলট প্যারাসুটে করে মাটিতে নেমে আসার পর সিরীয় সেনাবাহিনীর অভিযানে তাকে উদ্ধার করা হয়।

তখন থেকেই তুরস্ক দাবি করে আসছে, তুর্কি আকাশসীমা লঙ্ঘণ করায় বেশ কয়েকবার সতর্ক করার পর রুশ বিমানটিকে ভূপাতিত করা হয়েছে। অবশ্য আকাশসীমা লঙ্ঘণের স্থায়িত্ব ১৭ সেকেন্ডের বেশি ছিল না বলেও তুর্কি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

অপরদিকে, রাশিয়া দাবি করেছে, রুশ বোমারু বিমান তুর্কি আকাশসীমা লঙ্ঘণ করেনি এমন কী তুর্কি কর্তৃপক্ষ বিমানটি ভূপাতিত করার আগে কোনো সতর্কতাও জানায়নি। এ ঘটনাকে ‘পিঠে ছুরি মারা’ বলেও মন্তব্য করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।  

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তুরস্কের সঙ্গে সুর মিলিয়ে দাবি করেছে, তুর্কি ও মার্কিনসূত্রে পাওয়া তথ্য-প্রমাণ এটাই নির্দেশ করছে, রুশ বোমারু বিমানটি তুর্কি আকাশসীমা লঙ্ঘণ করেছিল।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে রাশিয়া দেশটিতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে।

তুরস্ক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রবল বিরোধিতাকারী। তুরস্কের ভূমি থেকে সিরিয়ায় জিহাদিদের প্রবেশের ব্যাপারে তুর্কি কর্তৃপক্ষ ‘চোখ বুঁজে থাকার’ নীতি নিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

কয়েকমাস আগেও আইএসের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে তুরস্কের তীব্র অনীহা ছিল। তবে অগাস্টে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটকে তুর্কি ভূমি ব্যবহার করে সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে আকাশ হামলার অনুমতি দেয়।

রুশ বিমান ভূপাতিত করার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া তুরস্কের বিরুদ্ধে বেশকিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মধ্যে তুর্কি খাদ্য আমদানি এবং দুই দেশের মধ্যে ভিসা-ফ্রি ভ্রমণও রয়েছে।

জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস অবৈধ তেল বিক্রির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ আয় করে থাকে। এর মাধ্যমে আইএস বিশ্বের সবচে অর্থশালী জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

তুরস্ক বরাবরই আইএসের কাছ থেকে তেল কেনার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে।