‘গর্ভপাত বিরোধিতা’ থেকেই হামলা কলোরাডোর ক্লিনিকে

যুক্তরাষ্ট্রে কলোরাডোর পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকে হামলাকারী গর্ভপাত বিরোধিতা থেকে একাজ করেছেন, এমনটিই বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ক্লিনিকটি পরিচালনাকারী সংগঠন ‘প্ল্যান্ড প্যারেন্টহুড’ একথা জানিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2015, 07:03 AM
Updated : 29 Nov 2015, 07:04 AM

শুক্রবার  কলোরাডোর স্প্রিংস পৌর এলাকার ওই ক্লিনিকে এক বন্দুকধারীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে পুলিশসহ ৩ জন নিহত এবং কপক্ষে ৯ জন আহত হয়।

রবার্ট লুইস ডিয়ার নামক ওই হামলাকারীকে পরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়ার সময় ডিয়ার ‘শিশুর খন্ডাংশ আর নয়’ - এমন মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে হামলার কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানতে না পারলেও ডিয়ার পুলিশের কাছে যে বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে তিনি রাজনীতি এবং গর্ভপাত নিয়ে কথা বলেছেন।

পুলিশের জেরার সময় এক বিবৃতিতে লুইস ডিয়ার প্ল্যানড প্যারেন্টহুডের নাম উল্লেখ করে গর্ভপাত বিরোধী ওই মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে এনবিসি নিউজ।

বিবিসি জানায়, প্ল্যানড প্যারেন্টহুডের প্রেসিডেন্ট ও নির্বাহী প্রধান ভিকি কোয়ার্টও শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন,  প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে পাওয়া নিশ্চিত তথ্যে তারা জানতে পেরেছেন যে, কলোরাডোর স্প্রিংসের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ১২ জন হতাহতের ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি নিরাপদ এবং বৈধ গর্ভপাতের বিরোধিতার কারণেই এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

প্ল্যানড প্যারেন্টহুড পরিচালিত ক্লিনিকগুলোতে মূলত গর্ভপাত এবং যৌনরোগের চিকিৎসা হয়। একারণে ক্লিনিকগুলোর ওপর  গর্ভপাত-বিরোধীদের আক্রোশ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শহরে এই ধরনের ক্লিনিক রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গর্ভপাতের বিরোধীরা প্ল্যানড প্যারেন্টহুডের বিরুদ্ধে অতীতে অনেক বিক্ষোভ করেছে। ক্লিনিকে গর্ভপাত করানোর পর মৃত ভ্রূণের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংরক্ষণ করে তা চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় কাজে লাগানো হয় এমন অভিযোগে বিক্ষোভ করে গর্ভপাত বিরোধীরা।

বিশেষ করে কলোরাডো স্প্রিংসের ক্লিনিকটি তখন থেকেই ‘গর্ভপাত’ ক্লিনিক হয়ে ওঠে প্রতিবাদকারীদের কাছে। বিক্ষোভের মুখে সেখানকার নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়।

কিন্তু সেই নিরাপত্তা জাল ভেদ করেই ক্লিনিকে অবলীলায় ঢুকে পড়েন নর্থ ক্যারোলাইনার বাসিন্দা রবার্ট লুইস ডিয়ার। পুলিশের সঙ্গে ঘণ্টা পাঁচেক গুলিবিনিময়ের পর আত্মসমর্পণ করেন তিনি।

এ ঘটনার জেরে ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্নেয়াস্ত্র-নিয়ন্ত্রণ আইন। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা  ‘‘যথেষ্ট হয়েছে” মন্তব্য করে ফের অস্ত্র আইন কঠোর করার ডাক দিয়েছেন। তবে তার এ উদ্যোগের বিরোধিতা করছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস।