আগুন নিয়ে খেলবেন না: তুর্কি প্রেসিডেন্ট

রাশিয়াকে ‘আগুন নিয়ে না খেলার’ জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তায়েপ এরদোয়ান।

>>রয়টার্স
Published : 28 Nov 2015, 11:32 AM
Updated : 28 Nov 2015, 11:57 AM

গত সপ্তাহে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে তুর্কি জঙ্গিবিমান থেকে গুলি করে একটি রুশ বোমারু বিমান ভূপাতিত করা হয়।

এই ঘটনার পর দুই দেশের সম্পর্কে চরম অবনতি হয়েছে।

মস্কো জানিয়েছে, তারা তুরস্কের সঙ্গে ভিসা-বিহীন ভ্রমণ ব্যবস্থা বাতিল করবে।

শুক্রবার মস্কোতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ বলেন, জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে মস্কো তুরস্কের সঙ্গে ভিসা-বিহীন ভ্রমণ ব্যবস্থা বাতিল করবে।

“আমাদের এ সিদ্ধান্তে তুরস্কের পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

তুরস্কের সমুদ্র পাড়ের রিসোর্টগুলো রুশ পর্যটকদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়। জার্মানির পর রাশিয়া থেকেই সবচেয়ে বেশি পর্যটক তুরস্ক যায়।

বিমান ভূপাতিত করার পর রাশিয়া তুরস্কের ওপর ব্যাপক পরিসরে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ।

তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে বিস্তৃত বানিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। সর্বশেষ ঘটনার কারণে সেই সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবারের ঘটনার পর রাশিয়ায় একটি বানিজ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী তুর্কি ব্যবসায়ীদের ভিসায় অনিয়মের অভিযোগে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার বৈরুতে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেয়ার সময় এরদোয়ান বলেন, “রাশিয়ায় যাওয়া তুরস্কের নাগরিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অর্থ তারা (রাশিয়া) আগুন নিয়ে খেলছে।”

“রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের যে সম্পর্ক সেটাকে আমরা সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। আমরা চাই না কোনো কারণে এই সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হোক।”

আগামী সপ্তাহে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলন শুরু হবে। সেখানে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে পারেন বলেও জানিয়েছেন এরদোয়ান।

যদিও পুতিন এখন পর্যন্ত এরদোয়ানের সঙ্গে কোনো ধরণের যোগাযোগ  করবেন না বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন।

পুতিনের সহকারী জানান, যেহেতু বিমান ভূপাতিত করার জন্য আঙ্কারা ক্ষমা চায়নি তাই পুতিন এরদোয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না।

আর এরদোয়ান মনে করেন, যেহেতু তুরস্কের আকাশসীমা লঙ্ঘন করা হয়েছে তাই রাশিয়ার উল্টা ‍ক্ষমা চাওয়া উচিত।

রয়টার্স জানায়, রাশিয়ার অস্ত্র ও সামরিক যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারী কারখানাগুলোর সমিতি তুরস্ক থেকে কাঁচামাল ক্রয় বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর ফলে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের চুক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

রাশিয়ার কৃষি মণ্ত্রনালয় এরই মধ্যে তুরস্ক থেকে আমদানি করা খাদ্য ও কৃষি পণ্যে নজরদারি বাড়িয়েছে।

তুরস্কের মন্ত্রিপরিষদ এ সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজছে বলে জানান তুরস্ক সরকারের মুখপাত্র নুমান কুরতুলমুস।

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এরকম একটা ঘটনায় রাশিয়া তুরস্কের সঙ্গে সব ধরণের সম্পর্ক শেষ করে দেবে এটা আমি কল্পনাও করতে পারছি না। এরকম ঘটনায় রাশিয়ার সঙ্গে সব সম্পর্ক শেষ করে দেয়া তুরস্কের জন্য অসম্ভব।”

এরদোয়ান বলেন, গুলি করে রাশিয়ার বিমান ভূপাতিত কারার কোনো ইচ্ছা তুরস্কের ছিল না। কিন্তু আকাশসীমা লঙ্ঘিত হওয়ায় সেনাবাহিনীকে দেয়া স্থায়ী নির্দেশনার অংশ হিসেবে ‘স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়া’ বিমান ভূপাতিত করা হয়।