মিস ওয়ার্ল্ড কানাডাকে চীনে প্রবেশে বাধা

চীনের জনগণের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলায় মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করতে পারছেন না কানাডার প্রতিযোগী আনস্তাসিয়া লিন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2015, 04:53 PM
Updated : 27 Nov 2015, 04:53 PM

১৯ ডিসেম্বর মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হবে চীনে পর্যটন শহর সানিয়ায়।

চীন সরকারের কাছ থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের জন্য কোনো আমন্ত্রণপত্র না পাওয়ায় চায়না-বংশোদ্ভূত লিন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেননি।

এরপরও তিনি পর্যটক হিসেবে হংকং হয়ে সানিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। হংকংয়ে কানাডার নাগরিকদের জন্য সেখানে পৌঁছে ভিসার (এরাইভাল ভিসা) আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।

কিন্তু হংকং বিমানবন্দরেও ২৫ বছর বয়সী লিনকে আটকে দেওয়া হয়। চীনে ঢুকতে বাধা দেওয়া তার অধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করেন লিন।

লিনের অভিযোগ, বিমানে ওঠার জন্য হংকং বিমানবন্দরের ড্রাগনএয়ার কাউন্টার দিয়ে প্রবেশ করার সময় তাকে আটকে দেওয়া হয়।

বিবিসি জানায়, সানিয়ার এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার জন্য হংকং বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা লিনের সফরসঙ্গী কাকেই কক্সকেও ফিরে যেতে বলেন।

কথা বলার সময় লিনকে জানানো হয়, তিনি সানিয়ায় প্রবেশ করতে পারবেন না।

বিবিসি’র পক্ষ থেকে ড্রাগনএয়ারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার’ অজুহাত দেখিয়ে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানাননি তারা।

 মিস কানাডা নির্বাচিত হওয়ার পর আনস্তাসিয়া লিন চীন সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের উপর ‘দমন ও বিধিনিষেধ’ আরোপের কড়া সমালোচনা করেন।

বিশেষ করে, সরকারের ফালুন গং চর্চায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে কথা বলেন তিনি।

 লিনআমন্ত্রণপত্র না পাওয়ার বিষয়টি প্রথম গণমাধ্যমকে জানানোর পর বিবিসি’র পক্ষ থেকে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

ওই সময় কানাডার দৈনিক ‘দ্য গ্লোব’ এবং ‘দ্য মেইল’ লিনের বিষয়ে জানতে কানাডায় অবস্থিত চীনের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে বলা হয়, “আস্থা রাখা যায় না এমন কোনো ব্যক্তিকে সরকার চীনে ঢোকার অনুমতি দিতে পারে না।”

এক বিবৃতিতে লিন বলেন, “আমাকে চীনে প্রবেশের অনুমতি না দেয়া দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু বিষয়টি  অপ্রত্যাশিত ছিল না। রাজনৈতিক কারণে চীন সরকার আমাকে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে বাধা দিয়েছে।”

“আমার নিজস্ব বিশ্বাসের জন্য তারা আমাকে শাস্তি দেওয়া এবং  মানবাধিকার নিয়ে আমার কথা বলা আটকাতে চেষ্টা করছে।”

২০০৩ সালে চীন থেকে কানাডা চলে যান ১২ বছর বয়সী লিন। লিনের বাবা এখনও চীনে বাস করেন এবং তার কারণে তার বাবাকেও কর্তৃপক্ষ হেনেস্তা করছে বলে দাবি তার।

১৯৯২ সালে চীনে আধ্যাত্মিক আন্দোলন হিসেবে ফালুন গং চর্চা শুরু হয়, যার প্রতিষ্ঠাতা লি হংঝি।

শুরুতে চীন কর্তৃপক্ষ একে ধর্মীয় বিশ্বাস বলে মেনে নিয়েছিল। দ্রুত ফালুন গং অনুগামীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। ১৯৯৯ সালে ফালুন গং অনুগামীরা সরকারের কাছে স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে চীন সরকার সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং ধরপাকড় শুরু করে।