‘ঘড়ি বালক’ আহমেদের দেড়কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি

‘ঘড়ি বালক’ হিসাবে পরিচিতি পাওয়া টেক্সাসের স্কুলছাত্র আহমেদ মোহামেদকে হয়রানির করায় তার পরিবার নগর এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে দেড় কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। অন্যথায় দুই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2015, 05:44 AM
Updated : 24 Nov 2015, 07:15 AM

সোমবার ক্ষতিপূরণ চেয়ে আর্ভিং নগর কর্তৃপক্ষ এবং ম্যাকআর্থার স্কুলে আলাদাভাবে চিঠি পাঠিয়েছেন আহমেদ পরিবারের আইনজীবীরা।

‘ঘড়িকাণ্ডে’ আহমেদের গ্রেপ্তার ও অভিভাবকদের অনুপস্থিতিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করাকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে ওই ঘটনার জন্য দুই কর্তৃপক্ষকেই ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে চিঠিতে।

গত সেপ্টেম্বরে নিজের তৈরি করা একটি ঘড়ি শিক্ষকদের দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন ম্যাকআর্থার স্কুলের নবম গ্রেডের শিক্ষার্থী আহমেদ। কিন্তু তার ঘড়িটিকে বোমা ভেবে পুলিশে খবর দিলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় সেসময় বিশ্বজুড়ে প্রচণ্ড প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ফেইসবুক, টুইটারসহ সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ব্যবহারকারীরা আহমেদের সমর্থনে ‘আই স্ট্যান্ড উইথ আহমেদ’ ও ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ফর আহমেদ’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে লাখ লাখ ক্ষুদে বার্তা ছাড়ে।

অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিও আহমেদের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিবৃতি দেন। ফেইসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গও সবাইকে আহমেদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।

পরে অবশ্য তাকে বাবা-মার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।  প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আহমেদকে তার বানানো ঘড়ি নিয়ে হোয়াইট হাউসে দেখা করার আমন্ত্রণ জানান।

আহমেদকে হয়রানির ক্ষতিপুরণ হিসাবে তার পরিবার নগর কর্তৃপক্ষের কাছে এক কোটি এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ৫০ লাখ ডলার দাবি করেছে। এই অর্থ না পেলে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে মামলা করা হবে চিঠিতে জানানো হয়েছে।  

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই ঘটনা বিশ্বের গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে ওঠে এবং ওই কিশোর নানা ধরনের হুমকির শিকার হন, যার ফলে তিনি ‘গভীরভাবে মানসিক বিপর্যয়ের’ শিকার হন।

আহমেদের বানানো সেই ঘড়ি। এটিকেই বোমা ভেবে পুলিশে খবর দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। ছবি: রয়টার্স

‘প্রকাশ্যে অসদাচরণের’ শিকার হওয়ার ঘটনা তাকে সারাজীবনই বহন করতে হবে, এই ক্ষতির জন্যই আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে বলে আইনজীবী জানিয়েছেন।

স্কুল কর্তৃপক্ষ আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত চিঠির জবাব দেবে জানালেও নগর কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

ঘড়িরকাণ্ডের পর আহমেদ আর ম্যাকআর্থার স্কুলে ফিরবেন না বলে তার পরিবার জানিয়েছিল। ১৪ বছর বয়সী আহমেদ বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে কাতারের দোহায় রয়েছেন।

কাতার ফাউন্ডেশনের দেয়া শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মেধাবৃত্তি নিয়ে তিনি সেখানেই পড়াশোনা করছেন। এই ফাউন্ডেশন আহমেদকে মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত পূর্ণ মেধাবৃত্তি দিয়েছে।

ওই ঘটনার পর টাইম ম্যাগাজিনের করা ২০১৫ সালে বিশ্বের প্রভাবশালী ৩০ কিশোর-কিশোরীর তালিকায় উঠে আসে আহমেদের নাম।