আন্দোলনরত শরণার্থীদের অধিকাংশই মরক্কো, ইরান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নাগরিক। তাদেরই মধ্যে এক ইরানি অনশনের ঘোষণা দিয়ে দুই ঠোঁট সুঁচ-সুতা দিয়ে সেলাই করে পুলিশের সামনে বসে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এই ইরানির নাম হামিদ।
কোথায় যেতে চান রয়টার্সের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে ৩৪ বছর বয়সী হামিদ বলেন, “বিশ্বের যেকোনো স্বাধীন দেশে। আমি ফিরে যেতে পারব না। ফিরে গেলে আমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।”
সেখানে বাংলাদেশের একদল শরণার্থী বুকে-পিঠে ‘শ্যুট আস, উই নেভার গো ব্যাক’ (‘আমাদের গুলি করো, আমরা কখনওই ফেরত যাব না) ‘শ্যুট আস অর সেভ আস’ (গুলি কর অথবা রক্ষা কর) স্লোগান লিখে প্রতিবাদ করছে।
এ বছর মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা ও এশিয়ার কয়েকটি দেশের হাজার হাজার শরণার্থী গ্রিস হয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে প্রবেশ করেছে। এর কয়েকগুণ এখনও ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করছে। তাদের মূল লক্ষ্য জার্মানি ও সুইডেন।
শরণার্থীদের এই ঢল সামলাতে হিমশিমে খেতে হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ)।
এর মধ্যেই ১৩ নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় সন্দেহভাজন এক হামলাকারী যে শরণার্থী হিসেবে ইউরোপে প্রবেশ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্যারিস হামলার পর শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি ইউরোপের দেশগুলোর জন্য নিরাপত্তা হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত সপ্তাহে ইউরোপের শেনজেন অঞ্চলের (পাসপোর্ট বিহীন ভ্রমণ অঞ্চল) দেশ স্লোভেনিয়া, সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তানের শরণার্থীদের সেখানে প্রবেশের অনুমতি না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া, স্লোভেনিয়ায় যারা ‘অর্থনৈতিক আশ্রয়’ প্রার্থণা করেছে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার কথাও বলেছে।
মেসিডোনিয়ার এই ঘোষণার কারণে হাজার হাজার শরণার্থীকে তীব্র শীতের মধ্যে বালকান সীমান্তে তাঁবুতে বসবাস করতে হচ্ছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছে, দেশ দেখে নয় বরং বাস্তবতা দেখে আশ্রয় প্রার্থীদের আশ্রয় দেওয়া উচিত।