মঙ্গলের ‘প্রাণ’ কেড়েছে সৌরঝড়

মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডল একসময় ছিল উষ্ণ আর ভেজা। যা ছিল প্রাণ ধারণের একেবারে উপযোগী। কিন্তু প্রাণের সেই সম্ভাবনা কেড়ে নিয়েছে শক্তিশালী এক সৌরঝড়।

/আইএএনএসরয়টার্স
Published : 6 Nov 2015, 04:34 PM
Updated : 6 Nov 2015, 04:34 PM

আর একারণেই এক সময়কার উষ্ণ আর ভেজা মঙ্গলের চারপাশ আজ হয়ে পড়েছে শুষ্ক আর শীতল, বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা।

মঙ্গলের বায়ুমন্ডল ও বিবর্তন নিয়ে শুরু করা নাসার মাভেন মিশন থেকে প্রথম এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। মাভেন স্যাটেলাইট নিয়ে কাজ করা গবেষকদের প্রথম বড় ধরনের সাফল্য এটি।

লাল গ্রহটিতে সূর্যরশ্মির প্রভাবে কিভাবে বায়ুমন্ডলে পরিবর্তন ঘটেছে গবেষকরা সেটিই খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেছেন তাদের গবেষণায়।

আর এতেই দেখা গেছে, সৌর ঝড়ের কারণে কিভাবে মঙ্গলগ্রহ বায়ুমন্ডলের ঘনত্ব হারিয়ে আজকের অবস্থায় পৌঁছেছে। সৌর ঝড়ের দাপটে মঙ্গলের পুরু বায়ু স্তর আস্তে আস্তে পাতলা হয়েছে।

গবেষকরা হিসাব করে দেখেছেন, সৌরবায়ু প্রতি সেকেন্ডে ১০০ গ্রাম হারে মঙ্গলের গ্যাস শুষে নিয়েছে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের মাভেন মিশনের প্রধান ব্রুস জাকোস্কি বলেন,“কোনও সিন্দুক থেকে চোর যেমন প্রতিদিন একটি একটি করে মুদ্রা চুরি করে, ঠিক তেমনই সৌরবায়ু দিনে দিনে কেড়েছে মঙ্গলের বায়ুর ঘনত্ব।”

তিনি আরও বলেন, “বায়ুমন্ডলের ঘনত্ব কমে যাওয়ার হার অনেক বেশি লক্ষ্য করা গেছে সৌরঝড়ের সময়। আর এ হার অনেক বেশি ছিল কোটি কোটি বছর আগে, যখন সূর্য ছিল আরও বেশি তেজোদ্দীপ্ত আর সক্রিয়।”

কিন্তু এবছরও গত মার্চ মাসে নাটকীয়ভাবে একের পর এক আরও সৌরঝড়ের মুখে পড়েছে মঙ্গল। এতে গ্রহটির বায়ুমন্ডল দ্রুত ক্ষয়ে গেছে। আর তখনই বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে এই ঝড় প্রভাব ফেলছে গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে।

নতুন পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, মঙ্গলগ্রহের তিনটি ভিন্ন অঞ্চলের বায়ুমন্ডলে এ ক্ষতি হয়েছে। তবে এ তথ্যগুলো এখনও বিশ্লেষণ  করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

তাছাড়া,  মঙ্গলে আরও এক বছর মিশন চালিয়ে প্রতিটি আলাদা আলাদা মৌসুমে গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে কি ধরণের প্রতিক্রিয়া হয় তা জানতে মাভেন মিশনের সময়ও বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তারা।

নতুন গবেষণা প্রতিবেদনটি সায়েন্স ম্যাগাজিন এবং জিওগ্রাফিকাল রিসার্চ লেটার্সে প্রকাশ করা হয়।