স্টেম সেল কেলেঙ্কারি: ডক্টরেট ডিগ্রী হারালেন জাপানি বিজ্ঞানী

জাপানের আলোচিত স্টেম সেল বিজ্ঞানী হারুকো ওবাকাতার ডক্টরেট ডিগ্রী বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এস এম নাদিমমাহমুদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Nov 2015, 10:02 AM
Updated : 3 Nov 2015, 10:43 AM

সোমবার দুপুরে গবেষক ওবাকাতার ডক্টরেট ডিগ্রী কেড়ে নেওয়ার কথা জানান টোকিওর ওয়াছেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট কারু কামাতা ।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে জাপানের প্রধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিকেন থেকে ওবাকাতার নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারে স্টেমুলাস ট্রিগারড অ্যাকুজুয়েশন অব প্লুরোপুটেন্সি (স্ট্যাপ) নামক এক প্রকার স্টেম সেল বিষয়ক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন।

প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়, ভ্রণীয় স্টেম কোষকে যেকোন প্রকার কোষে রূপান্তর করা সম্ভব।

কিন্তু ওই গবেষণাপত্র প্রকাশের পরপরই গবেষণাপত্রটির বিরুদ্ধে তথ্য কারচুপির অভিযোগ ওঠে বিশ্বের বিজ্ঞানী মহল থেকে।

এতে নেচার কর্তৃপক্ষ ওবাকাতাকে গবেষণার সঠিকতা প্রমাণের জন্য তথ্য-উপাত্ত দিতে বললে তিনি দিতে ব্যর্থ হন। এই নিয়ে সারা বিশ্বে তুমুল আলোচনা শুরু হলে ওই প্রবন্ধের এক সহ-গবেষক ও রিকেনের সহযোগী অধ্যাপক আত্মহত্যা করেন।

এরপর নেচারের প্রকাশিত নিবন্ধটি বাতিল করা হয় ।

ওবাকাতাকে রিকেন থেকে চাক্যুরিচ্যুত করা হলেও আলোচনা থেমে থাকেনি। গত ২৪ সেপ্টেম্বর চীন, নেদারল্যান্ড, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্যাপ কোষ নিয়ে অন্তত ১০০ বার গবেষণা করা পরও ভ্রণীয় ওই কোষের উৎস নির্ধারণে ব্যর্থ হলে বিষয়টি নিয়ে ফের সমালোচনা শুরু হয়।

সমালোচনার প্রেক্ষিত্রে জাপানের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ওয়াছেদার প্রশাসন হারুকো ওবাকাতার পিএইচডি ডিগ্রী বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসিডেন্ট কামাতা  বলেন, “ওবাকাতা যে অন্যায় করেছে তার প্রেক্ষিতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সুনামহানী হয়েছে, আমরা ওবাকাতার পিএইচডি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

“ওবাকাতা যদিও তার পিএইচডি গবেষণার একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সম্পন্ন করেছেন তারপরও একজন প্রতারকএই সম্মানজনক ডিগ্রী পাওয়ার অধিকার রাখেন না।”

একটি মিথ্যা গবেষণাপত্র যে কী পরিমাণ ক্ষতি ডেকে আনে তা ওবাকাতা অনুধাবন করতে পারেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রিকেন একটি বিশ্ব নন্দিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান,

এ প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীদের খাটো করার জন্য ওবাকাতার আরো বেশি শাস্তি হওয়া উচিত।”

রিকেন থেকে চাকুরিচ্যুত হওয়ার পর নেচারে ভুয়া প্রবন্ধ প্রকাশের কারণে হারুকো ওবাকাতাকে ৬ লাখ ইয়েন জরিমানাও দিতে হয়েছে ।