সিডনির গোলাগুলিতে সন্ত্রাসবাদের যোগসূত্রের সন্দেহ

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য পুলিশের সদরদপ্তরের বাইরে গোলাগুলির ঘটনার সঙ্গে ‘সন্ত্রাসবাদের যোগসূত্র’ রয়েছে বলে দেশটির পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

>>রয়টার্স
Published : 3 Oct 2015, 04:58 AM
Updated : 3 Oct 2015, 05:11 AM

অস্ট্রেলীয় পুলিশ শনিবার দাবি করেছে, ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর শুক্রবার যে হামলা চালিয়েছে তার সঙ্গে ‘সন্ত্রাসবাদের সম্পর্ক’ রয়েছে বলে তারা বিশ্বাস করেন।

ওই হামলায় পুলিশ বিভাগের একজন কর্মী ও বন্দুকধারী কিশোরও নিহত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র অস্ট্রেলিয়া ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন অভিযানে যুক্ত রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত হামলাকারী কিশোর ইরাকি-কুর্দি বংশোদ্ভূত। ইরানে তার জন্ম হয়েছিল।

নিউ সাউথ ওয়েলসের পুলিশ কমিশনার এন্ড্রু শিপিওনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি তার (নিহত হামলাকারী) কর্মকাণ্ড ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত।”

তিনি যোগ করেন, ওই কিশোর পুলিশের কাছে কিংবা সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তাদের কাছে অপরিচিত ছিলেন।

এরআগে অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজের খবরে বলা হয়, শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ কমিশনার শিপিওনিকে উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি লিখেছে, অজ্ঞাতপরিচয় পরিচয় বন্দুকধারী পুলিশের ওই কর্মীকে গুলি করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অন্য পুলিশ সদস্যদের দিকে গুলি ছুঁড়তে থাকেন। জবাবে কয়েকজন পুলিশ কনস্টেবল পাল্টা গুলি ছুড়লে হামলাকারীও নিহত হয়।     

“আমি এ ঘটনার কিছু ভিডিও দেখেছি। এটি একটি বর্বর হত্যাকাণ্ড,” বলেন শিপিওনি।

গোলাগুলির পরপরই পুলিশ ওই এলাকা ঘিরে ফেলে এবং হেলিকপ্টারে করে ওই এলাকায় টহল শুরু হয়।

গেলবছর অস্ট্রেলিয়ায় ইসলামি জঙ্গিবাদীদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার শঙ্কার মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সিডনির একটি ক্যাফেতে প্রায় ১৭ ঘণ্টার জিম্মি সঙ্কটের অবসান ঘটে পুলিশের রক্তাক্ত অভিযানের মধ্য দিয়ে।  

বাংলাদেশে ‘অস্ট্রেলিয়ার স্বার্থের’ ওপর জঙ্গি হামলার হুমকির কথা বলে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড তাদের দলের নির্ধারিত ঢাকা সফর স্থগিত করার পর ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই খোদ সিডনিতে এই হামলার ঘটনা ঘটল।

এ ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল অস্ট্রেলিয়ানদের প্রতি মুসলিম সম্প্রদায়কে এ ব্যাপারে দোষারোপ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।

মেলবোর্নে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সহিংসতা। সুতরাং এটি সন্ত্রাসবাদী ঘটনা।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা অবশ্যই সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়কে এ ঘটনার জন্য নিন্দা করবো না। সত্য তো এই যে, অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটি অংশই সহিংস চরমপন্থি।”

নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ার ৭০ জন নাগরিক মধ্যপ্রাচ্যে জঙ্গি-বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। আর ওইসব উগ্রপন্থি গোষ্ঠীগুলোকে অস্ট্রেলিয়ায় থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা বা সমর্থন দিচ্ছেন প্রায় ১০০ নাগরিক।