পরিস্থিতি ক্রমেই বিশৃঙ্খল হয়ে উঠতে থাকায় ইউরোপে অভিবাসী সঙ্কটের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে উত্তাল হাঙ্গেরি।
দুই দিন ধরে আটকা পড়া শ’ শ’ অভিবাসীর বিক্ষোভের মুখে বুদাপেস্টের প্রধান রেলওয়ে স্টেশনের দ্বার বৃহস্পতিবার খুলে দেয়ার কয়েকঘণ্টা পর অভিবাসীদেরকে অস্ট্রিয়াগামী একটি ট্রেনে উঠতে দেয় কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু সেই ট্রেন পরে অস্ট্রিয়া সীমান্ত অভিমুখে না গিয়ে বুদাপেস্টের ৪০ কিলোমিটার পশ্চিমের বিকস্কে শহরে গিয়ে থামে। যেখানে আছে হাঙ্গেরির বিশাল একটি শরণার্থী শিবির।
শহরটিতে ষ্টেশনের পাল্টফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ অভিবাসীদেরকে ট্রেন থেকে নামিয়ে জোর করে শরণার্থী শিবিরে নেয়ার চেষ্টা চালালে তাদের সঙ্গে পুলিশের ধ্বস্তধ্বস্তি শুরু হয়। পুলিশ কয়েকজনকে আটকও করে।
অনেক অভিবাসীই শরণার্থী শিবিরে নাম নিবন্ধন করে সেখানে আটকা পড়ে যাওয়ার ভয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। ‘ক্যাম্প না’ ‘ক্যাম্প না’ বলেও স্লোগান দেয় তারা।
শরণার্থীদের অনেকেই একযোগে মারমুখী হয়ে দাঙ্গা পুলিশকে হটিয়ে ফের ট্রেনে ওঠার চেষ্টা চালায়। ছোট বাচ্চা নিয়ে একটি পরিবার রেললাইনের ওপর শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানায়। পুলিশ জোর করে তাদের ওঠাতে গেলে দুপক্ষে হাতাহাতি হয়।
হাঙ্গেরির এ অভিবাসী সঙ্কট সামাল দেয়া নিয়ে এরই মধ্যে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।
ব্রাসেলসে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওর্বান বুদাপেস্টের পরিস্থিতিকে জার্মানির সমস্যা বলে বর্ণনা করেছেন। কারণ, ইইউ দেশগুলোতে পৌঁছানো বেশির ভাগ শরণার্থীই জার্মানি যাওয়ার চেষ্টায় আছে।
ওদিকে, ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড তুস্ক অন্তত ১ লাখ শরণার্থীকে ইইউ দেশগুলোতে ভাগ করে নেয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন।
ইউরোপে প্রবেশ করা অভিবাসীর সংখ্যা এরই মধ্যে রেকর্ড গড়েছে। কেবল জুলাইয়েই ইউরোপে প্রবেশ করেছে ১০৭,৫০০ অভিবাসী। জার্মানিতে এ বছর অভিবাসীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৮ লাখে। এ সংখ্যা গতবছরের তুলনায় ৪ গুণ বেশি।
শরণার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ইইউ অভিবাসন নীতি নিয়ে উদ্বেগ এবং মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। জার্মানি বহু সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থী নিতে ইচ্ছুক থাকলেও অন্যান্য দেশ তা নিতে রাজি নয়।