মুম্বাই বোমা হামলার আসামি ইয়াকুবের মৃত্যুদণ্ড বহাল

১৯৯৩ সালের মার্চে ভারতের মুম্বাইয়ে চালানো ধারাবাহিক বোমা হামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত ইয়াকুব মেমনের মৃত্যুদণ্ড বহাল  রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2015, 05:13 PM
Updated : 29 July 2015, 05:13 PM

ফলে রায় কার্যকর হওয়ায় পথে আর কোনো আইনি বাধা রইলো না।৩০ জুলাই বৃহস্পতিবারই মেমনের ফাঁসি কার্যকর হতে পারে।

ফাঁসির নির্দেশে স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ করে দিয়ে তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, টাডা আদালতের জারি করা মৃত্যু পরোয়ানায় কোনও ভুল ছিল না।

 ‘মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার জন্য সরকার যথাযথ আইনী পদ্ধতি অনুসরণ করেনি। অতএব ফাঁসির নির্দেশ রদ করা হোক’, বলে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন মেমনের আইনজীবী। কিন্তু দিন-ব্যাপী শুনানির পর বুধবার তা খারিজ করে দিয়েছে আদালত।

মেমনের আবেদন খারিজ করার সময় বিচারপতি দীপক মিশ্র নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়, “মৃত্যু পরোয়ানা জারি হলে ভুল ধরা যাবে না।”

বিচারপতি মিশ্র বলেন, “(মৃত্যু পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে) আইনগতভাবে আমরা কোনো অব্যবস্থাপনা খুঁজে পাইনি।”

এর আগে ২১ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট মেমনের দণ্ড বাতিলের চূড়ান্ত আবেদন নাকচ করে দেয়। তখন খবরে বলা হয়েছিল, মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার ৩০ জুলাই ইয়াকুবের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে।

কিন্তু পরোয়ানা সঠিক ভাবে জারি না হওয়ার আবেদনের পর মঙ্গলবার বিচারপতি অনিল আর. দেব ও বিচারপতি কুরিন জোসেফ এর মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়ায় বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়।

সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, “তিনজন জ্যেষ্ঠ বিচারক মেমনের দণ্ড বাতিলের চূড়ান্ত আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন। যাদের রায় অকার্যকর বা অনুপযুক্ত বলে গণ্য হতে পারে না।”

দণ্ড বাতিলের চূড়ান্ত আবেদন খারিজ হওয়ার পর মেমনের পক্ষ থেকে মহারাষ্ট্রের গভর্নরের কাছেও প্রাণভিক্ষার আবেদন করা হয়।

বুধবার সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে কোনো কথা বলেনি। তবে মহারাষ্ট্র গভর্ণর সি.ভি. রাও বুধবার মেমনের প্রাণভিক্ষার আবেদন বাতিল করে দেন।

১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ের (তখন বোম্বে নামে পরিচিত ছিল) শেয়ার বাজার, একটি জনপ্রিয় সিনেমা হল ও দুটি মার্কেটে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়, যাতে অন্তত ২৫৭ জন নিহত হয় এবং ৭১৩ জন আহত হন।

ইয়াকুবের ভাই ‘টাইগার’ মেমন এবং মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিম ওই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বলে পুলিশের ধারণা।

ওই সময়ে ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় মুসলমানদের হত্যার প্রতিশোধ নিতেই ওই হামলা চালানো হয়। ‘টাইগার’ মেমন ও দাউদ ইব্রাহিম পলাতক এবং কথিত আছে তারা পাকিস্তানে আছেন।

এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অন্যদের শাস্তি কমে যাবজ্জীবন হয় ২০১৩ সালে। তবে ২০০৭ সালে মুম্বাইয়ের বিশেষ আদালত মেমনসহ বাকি ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

কিন্তু ২০১৩ সালে বাকিদের শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হলেও ‘হামলা পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার’ দায়ে মেমনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়।  বর্তমানে তিনি নাগপুরের একটি কারাগারে বন্দি আছেন।

ইয়াকুবের ভাই ‘টাইগার’ মেমন ১৯৯৩ সাল থেকেই পলাতক। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ১৯৯৪ সালে পাকিস্তান থেকে ভারতে ফিরে আসেন ইয়াকুব। এর কয়েকদিন পরই তাকে আটক করা হয়।

ইয়াকুবের দাবি, তিনি আত্মসমর্পণ করেন। আর পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে গ্রেপ্তারের কথা বলা হয়।