ইরানসমর্থিত আধা-সামরিক বাহিনী আসায়িব আহল আল-হকের এই নেতা অভিযোগ করে বলেছেন, নতুনভাবে সীমান্ত নির্ধারণের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র নতুন করে সাজাতে চায়। আর এই কারণেই আইএসের বিরুদ্ধে চালানো অভিযান সফল হচ্ছে না।
সম্প্রতি ইরাকের নাজাফে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে খাজালি বলেছেন, “আমাদের বিশ্বাস আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র সঙ্কটের সমাধান চায় না, বরং সঙ্কট নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।”
“তারা দায়েশকে (আইএস) শেষ করতে চায় না। ইরাক ও এই অঞ্চলে নিজের প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়েশকে ব্যবহার করতে চায়। আমেরিকার প্রকল্প হল এই অঞ্চলকে বিভক্ত করা।”
অভিযোগ জানিয়ে তিনি বলেন, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিমান হামলা বাড়ানো হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা করতে ব্যর্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী।
আসায়িব, বদর ব্রিগেডস ও কাতায়িব হেজবুল্লাহ, এই তিনটি শিয়া উপদল মিলে জনপ্রিয় ‘মোবিলাইজেশন কমিটি’ বা হাশিদ শায়াবি গঠন করেছে। ইরাক সরকারের অনুমতিক্রমে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীটিই সবচেয়ে বেশি দক্ষতার প্রমাণ দিচ্ছে।
এক বছর আগে ইরাকের জাতীয় সেনাবাহিনী প্রায় ভেঙে পড়ার পর থেকে হাশিদ শায়াবিই দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী হয়ে উঠেছে। যদিও আইএসের দখল থেকে ছিনিয়ে নেওয়া সুন্নি এলাকায় লুটপাট চালানোর অভিযোগে অনেক আধাসামরিক বাহিনী তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।
খাজালি জানিয়েছেন, আইএসের কাছ থেকে সুন্নি অধ্যুষিত প্রদেশ আনবার পুনর্দখলের অভিযানে শিয়া যোদ্ধাদের অংশগ্রহণ কম রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদিকে চাপে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
“এখন আমেরিকার পরিকল্পনা হল, হাশিদ শায়াবির উপস্থিতি অন্ততপক্ষে ফাল্লুজার সীমান্ত পর্যন্ত আটকে রাখা এবং রামাদিতে পৌঁছতে না দেওয়া। ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর ওপর আমেরিকার নেতৃবৃন্দের চাপের গুরুত্ব এখানেই,” বলেন তিনি।
ওয়াশিংটন ও তার সুন্নি আরব মিত্রদের শঙ্কা, আনবার থেকে আইএসের জঙ্গিদের তাড়াতে ইরাকের শিয়া আধাসামরিক বাহিনীগুলোকে ব্যবহার করলে সেখানে সাম্প্রদায়িক হানাহানি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কয়েক মাসে শিয়া যোদ্ধাদের পুনর্দখলকৃত সুন্নি এলাকাগুলোতে হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো শৃ্ঙ্খলা লঙ্ঘণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খাজালি।
“গণমাধ্যমে ঝড় তোলা এসব অতিরঞ্জন সত্ত্বেও, কোনো গণমাধ্যমের প্রতিনিধিই শিয়া হাশিদ শায়াবির বিরুদ্ধে একটিও নির্বিচার হত্যা বা কোনো নিরপরাধ নাগরিক হত্যার অভিযোগ আনতে পারেনি,” বলেন তিনি।