‘পাঞ্জাবে হামলাকারীরা মুসলমান’

ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের পাকিস্তান সীমান্তবর্তী একটি শহরে একটি পুলিশ স্টেশন দখল করে ১২ ঘণ্টা লড়াই চালিয়ে নিহত তিন বন্দুকধারী মুসলমান বলে জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ। 

>>রয়টার্স
Published : 29 July 2015, 06:45 AM
Updated : 29 July 2015, 06:45 AM

সোমবার চালানো ওই হামলায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জড়িত থাকতে পারে ধারণা নাকচ করে দিয়েছেন পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিচালক সুমেধ সিং সাইনি। 

“নিহতদের মৃতদেহ পরীক্ষায় দেখা গেছে হামলাকারীরা মুসলিম,” আক্রান্ত পুলিশ স্টেশনটিতে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন সাইনি। 

হামলাকারীদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে চলা বন্দুক লড়াইয়ে এক কর্মকর্তাসহ চার পুলিশ, তিন বেসামরিক ও হামলাকারী তিন বন্দুকধারী নিহত হন।
 
এক দশকের বেশি সময় পরে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটল। 

পাঞ্জারের পাশের রাজ্য জম্মু ও কাশ্মিরে প্রায়ই বন্দুকধারীরা নিরাপত্তা বাহিনীর অবস্থানগুলোতে এ ধরনের হামলা চালিয়ে থাকে। ওইসব হামলার ধরনের সঙ্গে পাঞ্জাবের হামলার অনেক মিল আছে।  

তবে পুলিশ কী কারণে সিদ্ধান্ত নিল ওই হামলাকারীরা মুসলিম, তা খোলসা করে বলেননি সাইনি। পাশাপাশি এসব হামলাকারীরা পাকিস্তান থেকে এসেছেন কিনা তা নিশ্চিত করতেও অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। 

এর আগে হামলাকারীদের কাছে পাওয়া গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের (জিপিএস) সূত্র ধরে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকটি সূত্র হামলাকারীরা পাকিস্তান থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন বলে দাবি করেছিল।  

সাইনি জানিয়েছেন, হামলাকারীদের পরিচয় তখন পর্যন্ত সনাক্ত করা যায়নি এবং তাদের কাছে কোনো পরিচয়পত্র বা কোনো ধরনের নথি ছিল না। 

“তারা এমনকি তাদের অস্ত্রগুলোর সনাক্তকরণ চিহ্নও মুছে ফেলেছে,” বলেছেন সাইনি। 

হামলাকারীরা নিহত হওয়ার পর পুলিশ স্টেশনটির ভিতর থেকে দুটি জিপিএস ডিভাইস জব্দ করেছে পুলিশ। 

সাইনি জানিয়েছেন, সেগুলো থেকে পাওয়া প্রোগ্রাম রুটে দেখা গেছে, রুটটি ভারত-পাকিস্তানি সীমান্ত থেকে রেললাইনের দিকে গেছে, সোমবার যেখান থেকে পাঁচটি বোমা পাওয়া গেছে। তারপর রুটটি পুলিশ স্টেশনের দিকে গেছে। 
 
এতে পুলিশ ধারণা করছে, বোমা যারা পেতেছে তারাই পুলিশ স্টেশনে বন্দুক লড়াই করেছে। 

অপর এক পুলিশ সদস্য জানিয়েছেন, জিপিএসে সীমান্তের ভারতীয় অংশের তথ্য প্রথম উঠেছে ২১ জুলাই।
  সোমবার কয়েকজন বিশ্লেষক নজিরবিহীন হামলাটিকে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদের পুনরুত্থান বলে সন্দেহ করেছিলেন। 
 
১৯৮০ দশকজুড়ে এই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতীয় সরকারের সঙ্গে লড়াই করেছিল। এই লড়াইয়ের অংশ হিসেবেই ১৯৮৪ সালে নিজের শিখ দেহরক্ষীদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি। 
 
কিন্তু পুলিশের কয়েকটি সূত্র বলেছে, হামলার দুইদিন আগে হামলাকারীরা পাকিস্তান থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল। 

হামলার পর সোমবার হামলার নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তান বিবৃতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে নিহতদের পরিবার, ভারতীয় জনগণ ও সরকারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়। 

এ হামলার বিষয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা তার মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ সদস্যরা বিস্তারিত কোনো বিবৃতি দেননি।