গ্রাফিক্স কার্ড কেনার আগে জেনে নিন

বর্তমান সময়ে গেইমার আর কম্পিউটার ব্যবহারকারীর কাছে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বস্তুগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে গ্রাফিক্স কার্ড। গ্রাফিএক্স কার্ড কেনার আগে বিবেচনায় রাখতে হবে এমন বিষয়গুলো নিয়ে জানিয়েছে পিসিগেইমার ডটকম।

আজমল বশির শিহাববিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2015, 11:44 AM
Updated : 17 July 2015, 11:44 AM

মডেল নাম্বার: একটি গ্রাফিক্স কার্ডের পারফর্মেন্সের ব্যাপারে অনেকটাই আঁচ করা যায় এর মডেল নাম্বার থেকে। যা গ্রাফিক্স প্রসেসর ইউনিট (জিপিইউ), ক্লক রেইট আর মেমোরির ধারণক্ষমতার সমন্বয় নির্দেশ করে। গ্রাফিক্স কার্ডের মডেল নাম্বারের ফরম্যাট হচ্ছে ব্র্যান্ডের নামের পর মডেল নাম্বার লেখা থাকে। উন্নত গেইমিং পারফর্মেন্সের জন্য বাজেটের মধ্যে যতটা সম্ভব নতুন মডেল বেছে নেওয়া ভালো।

মেমোরির চেয়ে ব্যান্ডউইথ বেশি গুরুত্বপূর্ণ: গেইমারদের মধ্যে একটি ভুল অনেক বেশি দেখা যায়, পারফর্মেন্স বাড়াতে বেশি র‌্যাম চান তারা। এখানে মনে রাখতে হবে একই ক্লকরেটে ডিডিআর৩ র‌্যামের থেকে দ্বিগুণ ব্যান্ডউইথ দিয়ে থাকে ডিডিআর৫ র‌্যাম। সোজা কথায় বললে গ্রাফিক্স কার্ডের জন্য ৪ জিবি ডিডিআর৩ র‌্যামের থেকে ১ জিবি ডিডিআর ৫ র‌্যামই শ্রেয়।

মাথায় রাখতে হবে প্ল্যাটফরমের কথা:  যদিও গেইমিং পিসির ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স কার্ড সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হার্ডওয়্যার, কিন্তু কম্পিউটারের অন্যান্য বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হবে।

কারও কম্পিউটারে যদি সেলেরন, পেন্টিয়াম, সেম্পরন বা অ্যাথলন এক্স২-এর মতো পুরনো মডেলের ডুয়েল কোর প্রসেসর ব্যবহার করা হয়, তবে ওই কম্পিউটারের জন্য বেশি দামের গ্রাফিক্স কার্ড কেনা হবে অর্থের অপচয়। এক্ষেত্রে মধ্যম মানের গ্রাফিক্স কার্ড কেনাটাই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে।

প্রসেসরের সঙ্গে ডিসপ্লে নিয়েও ভাবতে হবে। পুরনো মডেলের ১২৮০x১০২৪ মনিটরের জন্য দামী গ্রাফিক্স কার্ড কিনে লাভ নেই। অন্যদিকে, কেউ যদি তিনটি ১৯২০x১০৮০ মনিটর ব্যবহার করে থাকেন, তবে তার উচিত উন্নত মানের গ্রাফিক্স কার্ড বেছে নেওয়া।

সবসময় একের চেয়ে জোড়া ভালো নয়: একসঙ্গে দুই গ্রাফিক্স কার্ড লাগালে কার্ডের পারফর্মেন্স দ্বিগুণ হবে না। বড়জোর ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

একাধিক কার্ড একসঙ্গে ব্যবহারের নানা ঝামেলাও আছে। জুড়ে দেওয়া দুই গ্রাফিক্স কার্ডের সম্পূর্ণ কার্যক্ষমতা নিশ্চিত করাও কঠিন কাজ। বিদ্যুৎ খরচ আর যান্ত্রিক জটিলতার আশঙ্কাও বাড়ে। সব মিলিয়ে ৪কে ডিসপ্লের তিন মনিটর নিয়ে খেলতে বসলে সেক্ষেত্রে একাধিক জিপিইউ কাজে আসবে। অন্যথায় একটি গ্রাফিক্স কার্ড থেকেই সব চাহিদা মেটান সম্ভব।

কেইসিং: গ্রাফিক্স কার্ড কেনার আগে অবশ্যই কেসিংয়ের জায়গা দেখে নিতে হবে। শখ করে কেনা গ্রাফিক্স কার্ডটি লাগানর যদি জায়গা না থাকে কেইসিংয়ে তখন ‘নিজের চুল ছেড়া’ ছাড়া আর কোনো গতি নেই বললেই চলে।

সেই সঙ্গে রাখতে হবে একটি ভালো পাওয়ার সাপ্লাই। মন মতো গ্রাফিক্স কার্ডের পারফর্মেন্স পেতে হলে, কার্ডের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহের সামর্থ্য রয়েছে এমন পাওয়ার সাপ্লাই বেছে নিতে হবে।

কুলিং সিস্টেম: উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন গ্রাফিক্স কার্ড অনেক বেশি শক্তি ব্যবহার করে থাকে। এর অনেক বেশি তাপ উৎপন্ন হয়। একটি ভালো কুলার না থাকলে যে কোনো সময় গ্রাফিক্স কার্ড পূড়ে যেতে পারে।

বাজারে সাধারণত দুই ধরনের কুলার পাওয়া যায়- রেফারেন্স আর আফটারমার্কেট। রেফারেন্স কুলার কম খরচের জন্য ভালো পছন্দ। এটি কম্পিউটারের কেইসের পেছন দিয়ে গরম হাওয়া বের করে দেয়। কিন্তু, এই কুলারগুলো একটু অতিরিক্ত আওয়াজ সৃষ্টি করে।

একটু বেশি খরচ করলে উচ্চ-ক্ষমতার কুলারযুক্ত গ্রাফিক্স কার্ড কেনা যাবে। এক্ষেত্রে, আসুসের ডিরেক্টসিইউ, ইভিজিএ-এর এসিএক্স, গিগাবাইটের উইন্ডফোর্স, এইচআইএসের আইসকিউ, স্যাফায়ারের ডুয়েল-এক্সের মতো গ্রাফিক্স কার্ড কেনা যেতে পারে।