২০১৪ সালে অভিনব ১০ আফ্রিকান স্টার্টআপ

২০১৪ সাল আফ্রিকার স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি অসাধারণ বছর বললে ভুল বলা হবে না। মহাদেশটির বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে বিভিন্ন কাঙ্খিত সেবা দিতে পারবে এমন ব্যবসায়ের প্রতি মনোযোগী হয়েছেন অনেক উদ্যোক্তাই। বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগও পেয়েছেন অনেকই।

আজরাফ আল মূতীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2014, 11:36 AM
Updated : 31 Dec 2014, 11:36 AM

আফ্রিকার নানা সমস্যার সমাধানে সক্ষম ও কাঙ্খিত সেবা দিতে পারবে, চলতি বছরেই প্রতিষ্ঠিত এমন ১০টি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা সিএনএন।

. সেন্ডি

অবস্থান ও ব্যবসায়িক পরিসর: কেনিয়া

সেবা: আফ্রিকাতে সরবরাহ সেবা ও কুরিয়ার সার্ভিস থাকলেও সেন্ডির অভিনব সেবায় গ্রাহক স্মার্টফোন অ্যাপের মাধ্যমেই সরবরাহকারীর অবস্থান ট্র্যাক করতে পারবেন। যানজট এড়িয়ে নাইরোবি ও লাগোসের মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোতে এভাবেই মোটোরবাইকের সাহায্যে ডেলিভারি সেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

. অ্যাঙ্গানি

অবস্থান ও ব্যবসায়িক পরিসর: কেনিয়া ও পূর্ব আফ্রিকা অঞ্চল

সেবা: পে-অ্যাজ-ইউ-গো ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়টি নতুন না হলেও কেনিয়ার জন্য সেবাটি নতুন। অ্যাঙ্গানি কম খরচে ক্লাউড সেবা দিচ্ছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। স্টার্টআপটির মূল বৈশিষ্ট্য, গ্রাহক নিজের প্রয়োজন মতো প্যাকেজ ব্যবহার করতে পারবেন।

. আইরোফিট

অবস্থান ও ব্যবসায়িক পরিসর: নাইজেরিয়া

সেবা: আফ্রিকায় প্রথম মোবাইল নেটওয়ার্কনির্ভর লেনদেন সেবা নিয়ে এসেছে আইরোফিট। নিজ সেবা অনুসারে স্টার্টআপটি কোনো প্রকার ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই মোবাইলের মাধ্যমেই লেনদেনের সুযোগ করে দিয়েছে।

 

. ওয়াইজটক

অবস্থান ও ব্যবসায়িক পরিসর: দক্ষিণ আফ্রিকা

সেবা: ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘ইনভাইট-অনলি’ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম গড়ে তুলেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই প্ল্যাটফর্মে একটি প্রতিষ্ঠান নিজ কর্মীদের আরও ভালোভাবে যোগাযোগের সুবিধা দিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মিটিং নির্ধারণ, তাৎক্ষণিক মেসেজ পাঠানো, ফাইল শেয়ার করা, বিভিন্ন প্রকল্পে একত্রে কাজ করাসহ এ ধরনের আরও অনেক সেবা দিয়ে থাকে এই প্ল্যাটফর্মটি।     

. গেইমসোল

অবস্থান ও ব্যবসায়িক পরিসর: নাইজেরিয়া, বৈশ্বিক

সেবা: বেশ কয়েক বছর ধরে উইন্ডোজ ফোনের জন্য গেইম তৈরি করছে এই আফ্রিকান গেইম নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। অনেকের মতেই আফ্রিকার স্টার্টআপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ‘সাকসেস স্টোর’ হল গেইমসোল। সিএনএনের তথ্য অনুসারে, গেইমসোলের নির্মিত গেইম ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপি ৯০ লাখ বার ডাউনলোড হয়েছে।

 

. স্ন্যাপস্ক্যান

অবস্থান ও ব্যবসায়িক পরিসর: দক্ষিণ আফ্রিকা

সেবা:  মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেন সুবিধা দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। অনেকটা অ্যাপল পের মতোই এর সেবার ধরন। গ্রাহকরা শুধু মোবাইল ফোনে কিউআর কোডের ছবি তুলে এবং যে পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে চান সেই পরিমাণ টাইপ করে সেবাটির মাধ্যমে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারেন।

. ডেলিভারি সায়েন্স

অবস্থান ও ব্যবসায়িক পরিসর: নাইজেরিয়া

সেবা: আফ্রিকার ই-কমার্স কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানের বাজার এখনও উঠতি। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের ডেটা, পণ্য গুদামজাতকরণ ও সরবরাহ খাতে সহযোগিতা করে প্রতিষ্ঠানটি। কোন প্রতিষ্ঠানের গুদামে কোন পণ্য আছে তা থেকে শুরু করে সঠিক প্রাপককে পণ্য পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত করতে ভেরিফিকেশন কোড ব্যবহারের অভিনব কৌশল কাজে লাগায় ডেলিভারি সায়েন্স।

. পেসেইল

অবস্থান ও ব্যবসায়িক পরিসর: ঘানা

সেবা: পেসেইল একটি ‘পে রোল ম্যানেজমেন্ট’ অ্যাপ। ঘানায় এখনও অনেক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব কর্মীদের বেতন ভাতার হিসাব রাখতে স্প্রেডশিট ব্যবহার করে। কর্মীদের বেতন-ভাতার হিসাব অনেক সহজ করে দিয়েছে অ্যাপটি। অ্যাপটিতে ঘানার করের হারও অন্তর্ভূক্ত থাকায় প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষকদের কাজ আরও সহজ হয়ে যায়।

 

. আন্ডেলা

অবস্থান ও ব্যবসায়িক পরিসর: নাইজেরিয়া, প্যান-আফ্রিকা

সেবা : স্টার্টআপ এ প্রতিষ্ঠানটি স্নাতকদের ডেভলপার হিসেবে প্রশিক্ষণ দেয় এবং পরবর্তীতে সম্ভাব্য নিয়োগকারীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। প্রধানত এভাবে আফ্রিকার প্রতিভা খুঁজে বের করে বিশ্বব্যাপি নিয়োগকারীদের সেবা দিয়ে থাকে আন্ডেলা। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে নাইজেরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে অফিস রয়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।

 

১০. বিআরসিকে

অবস্থান ও ব্যবসায়িক পরিসর: কেনিয়া ও সমগ্র আফ্রিকা

সেবা: বিআরসিকে মূলত একটি স্ব-চালিত, মোবাইল ওয়াইফাই ডিভাইস। ব্ল্যাকবক্সের মতো এই ডিভাইসটিকে ইন্টারনেটের ব্যাকআপ জেনারেটর হিসেবেই বর্ণনা করেছেন এর নির্মাতারা। আফ্রিকার সংযোগ সংক্রান্ত সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যেই কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। আফ্রিকার প্রতিনিয়ত বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে অনলাইনে সংযুক্ত থাকার বিষয়টি কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কিন্তু এ ডিভাইসের সাহায্যে শহর কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চল, যেকোনো স্থানে নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে এবং ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকা সম্ভব হবে।