বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সেই শিক্ষামূলক আয়োজনও শেষ করে দিতে হয়েছিল সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ। ইন্টারকম থেকে বলা হচ্ছিল জেনারেটর ব্যাকআপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগেই ভবন ছাড়ার কথা। তারপরও প্রশ্নের শেষ ছিল না তরুণ প্রোগ্রামারদের। এমনকি লিফটে নামতে নামতেও নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হল আয়োজক আর পেশাদার প্রোগ্রামারদের।
ঘটনা ১ নভেম্বরের। তরুণ প্রোগামারদের জন্য দিনব্যাপী এই আয়োজন করেছিল সুইজারল্যান্ডভিত্তিক এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিকিউর লিঙ্ক সার্ভিসেস লিমিটেড। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া আয়োজনের প্রথম অংশে ছিল তরুণ প্রোগ্রামারদের জন্য ‘সেলিস সুপার ট্যালেন্ট প্রোগ্রাম’।
রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে অবস্থিত মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত এই ‘সেলিস সুপার ট্যালেন্ট প্রোগ্রাম’-এ অংশ নেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি পাওয়া তরুণ প্রোগামাররা।
লক্ষ্যটা কী এই সুপার ট্যালেন্ট প্রোগ্রামের? “দেশের তরুণ প্রোগ্রামারদের জন্য নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি করাই এই সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য।”-- উত্তরে এমনটাই বললেন সিকিউর লিঙ্ক সার্ভিসেস লিমিটেড চিফ টেকনোলজি অফিসার(সিটিও) শাহ আলী নেওয়াজ।
‘সেলিস সুপার ট্যালেন্ট প্রোগ্রাম’-কে ভাগ করা হয়েছিল চারটি বাছাই পরীক্ষায়। লজিকাল প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের উপর ২টি পরীক্ষা। আর বাকি দুটি লিখিত ও মৌখিক। ৩০ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয় প্রথম লজিকাল প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ পরীক্ষা। “পরীক্ষায় ৪টি প্রোগ্রামিং বিষয়ক প্রশ্ন দেয়া হয়েছে, সমাধান করার জন্য সময় তিন ঘন্টা। ধাপে ধাপে পরীক্ষাগুলো আরও কঠিন হবে।”-- জানালেন শাহ আলী নেওয়াজ।
টেকটকে দর্শক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আশিজনেরও বেশি তরুণ প্রোগ্রামার। প্রত্যেক বক্তার জন্য সময় নির্ধারিত করা হয়েছিল ৪০ মিনিট। তবে বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে তা কমিয়ে ৩০ মিনিটে আনা হয়।
নিরুপায় হয়ে অনুষ্ঠান শেষ করতে হল সেলিসকে। তবে হাল ছাড়েননি শ্রোতারা, সুযোগ পেলেই নানা প্রশ্ন নিয়ে ঘিরে ধরছিলেন শাহ আলী নেওয়াজকে। এমনকি লিফটে নামার সময়ও শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন তিনি।
পুরো আয়োজন নিয়ে শাহ আলী নেওয়াজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন, “প্রোগ্রামারদের জন্য দেশেই উন্নতমানের কর্মক্ষেত্র তৈরি করার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু সেলিস সুপার ট্যালেন্ট প্রোগ্রামের। বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় সিকিউর লিঙ্ক সার্ভিসেস লিমিটেডে কাজ করার এবং কাজ শেখার সুযোগ। তিন বছর মেয়াদি এই প্রশিক্ষন প্যাকেজে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দেয়া হয় ২৪ লাখ টাকা। এছাড়াও প্যাকেজটি চালাতেই হবে এমন নয়। শিক্ষার্থীরা চাইলে যেকোনো সময় বের হয়ে আসতে পারবেন প্যাকেজটি থেকে।”
সেলিসের বিজনেস ডেভেলপার হাসিবুল হক সাকিব জানালেন, সেলিস টেকটক এবারই প্রথম হলেও এটা ছিল সেলিস সুপার ট্যালেন্ট প্রোগ্রামের পঞ্চম আয়োজন। ২০১২ সালের মার্চ থেকে চালু হয় এই প্রোগ্রামটি। তিন বছরে ১৫ জনেরও বেশি ‘সুপার ট্যালেন্ট’ বেরিয়ে এসেছে এই প্রোগ্রাম থেকে, সিকিউর লিঙ্ক সার্ভিসেস লিমিটেডের কাছে যাদের পরিচয় ‘রকস্টার ট্রেইনি’ হিসেবে।