কতটা ফ্যাশনেবল অ্যাপলওয়াচ

তিন বছর সময় লেগেছে ডিজাইনে, আনুষ্ঠানিক উন্মোচনের পর ব্যাপক আলোচনাও হচ্ছে অ্যাপল ওয়াচ নিয়ে। এই তিন বছরে অ্যাপলে যোগ দিয়েছেন ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির রথী-মহারথীরা।

মামুনুর রশীদ শিশিরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2014, 12:38 PM
Updated : 17 Sept 2014, 12:38 PM

সমালোচকরা যাই বলুন না কেন, অ্যাপল ভক্তরা যে লাইন ধরে কিনবেন নতুন এই ডিভাইসটি সেটা আঁচ করা যায়। তবে প্রশ্ন হল, “সাধারণ ক্রেতা বা বাজারে প্রচলিত হাতঘড়ির ভক্তদের কাছ থেকে কতটা ইতিবাচক সাড়া পাবে অ্যাপল ওয়াচ?”

এমনই একজন হাতঘড়ি ভক্তের কথা জানিয়েছে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন। হাতঘড়ির প্রতি এরিয়েল অ্যাডামসের দুর্বলতা তাকে বানিয়েছে হাতঘড়ির সংগ্রাহক। স্বাভাবিকভাবেই অ্যাপল ওয়াচ নিয়ে দারুন উৎসাহিত তিনি। অ্যাপল ওয়াচ সম্পর্কে তার মত, “বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আমি অ্যাপল ওয়াচ কিনবো। “মেকানিকাল ঘড়িগুলোর পাশাপাশি ব্যবহার করবো এটি। হয়তো দুই কব্জিতে দুটি ঘড়ি পরতে হবে আমাকে।”

নতুন পণ্য হিসেবে অ্যাপলওয়াচের পেছনে ৩৪৯ ডলার অনায়সেই খরচ করবেন ঘড়ি ও অ্যাপলপ্রেমিরা। তবে দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য প্রচলিত হাতঘড়ির বদলে অ্যাপলওয়াচ বেছে নেয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?

বর্তমান বাজারে প্রচলিত কনজিউমার ইলেকট্রনিক পণ্যের সঙ্গে তুলনা করলে হাতঘড়ির বাজার অনেক পুরানো। হালের স্মার্টওয়াচ আর ট্যাবলেট কম্পিউটার নিয়ে যেমন মাতামাতি চলছে, ঠিক তেমনি ক্রমশই বড় হচ্ছে দৈনিন্দিন জীবনে ব্যবহারের জন্য সস্তা হাতঘড়ি থেকে শুরু করে দামি হাতঘড়ির বাজারও।

বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের হিসাব অনুযায়ী ২০১৩ সালে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই হাতঘড়ির বাজার ছিল ৮৩০ কোটি ডলারের। এরমধ্যে বেশিভাগই ছিল কম-বেশি দেড়শ ডলার দামের ঘড়ি। তবে রোলেক্স, ওমেগা বা লুয়ি ভুইতোর মতো হাতঘড়ি নির্মাতার তৈরি ১ হাজার বা তার বেশি দামের ঘড়ির চাহিদাও বাড়ছে প্রতিনিয়ত।

এই বিশাল বাজারের বিপরীতে স্মার্টওয়াচের বাজার একেবারেই নতুন। ইউরোমনিটরের তথ্য অনুযায়ী ২০১৩ সালে সাড়ে সাত লাখ স্মার্টওয়াচ বিক্রি হয়েছে। এর বিপরীতে দেশটিতে স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে ১২.৩ কোটি। আর প্রচলিত হাতঘড়ি বিক্রি হয়েছে ৩.২ কোটি।

এখন পর্যন্ত স্মার্টওয়াচের বাজারে সবচেয়ে সফল প্রতিষ্ঠান বলতে হবে ‘পেবল’-কে। কিকস্টার্টার থেকে উত্থান প্রতিষ্ঠানটির। ক্রেতাদের কাছ থেকেও ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে পেবল স্মার্টওয়াচ। সেই তুলনায় স্যামসাং, সনি এবং এলজির মতো শীর্ষ প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আশানুরূপ সাফল্য পায়নি স্মার্টওয়াচের বাজারে।

অ্যাপল ওয়াচের ডিজাইনের বাহ্যিক বৈচিত্র্য এসেছে কেসিংয়ে ব্যবহৃত ধাতু আর বেল্টে। আছে ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণের কেসিংও। চামড়ার তৈরি ‘ক্লাসিক’ বেল্ট থেকে কয়েক রঙের রাবার বেল্ট, পাশাপাশি স্টেইনলেস স্টিলের চেইন ব্যবহারের সুযোগও অ্যাছে অ্যাপল ওয়াচে।

তবে এতকিছুর পরও অ্যাপলওয়াচ ক্লাসিক হাতঘড়ির বাজার দখল করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন ডিটেইলস ম্যাগাজিনের স্টাইল ডিরেকটর ইউজিন টং। “আমি হয়ত এটা ব্যবহার করবো ঠিকই, তবে প্রতিদিন নয়।”-- বলেছেন তিনি।