বাস্তব চরিত্র যখন ভিডিও গেইমে

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভিডিও গেইমসের চরিত্র তৈরি করা হয়েছে বাস্তব ব্যক্তিদের আদলে। তবে অনুমতি ছাড়া তারকা ব্যক্তিত্বদের আদলে গেইমস চরিত্র তৈরির ঘটনাও কম নয়। গেইমস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অনেকবারই এই বিষয়ে জড়িয়েছেন আইনী জটিলতায়, গুনতে হয়েছে জরিমানাও। এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা নিয়েই একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেছে সংবাদ মাধ্যম সিএনএন।

মামুনুর রশীদ শিশিরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2014, 02:30 PM
Updated : 24 July 2014, 02:38 PM
ম্যানুয়েল নরিয়েগা:
জনপ্রিয় গেইম ‘কল অফ ডিউটি: ব্ল্যাক অপস ২’ নির্মাতাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে বসেছেন পানামার সাবেব স্বৈরশাসক ম্যানুয়েল নরিয়েগা। অভিযোগ: গেইমটিতে তাকে যেখাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা নিতান্তই অপমানজনক। গেইমটিতে নিজের চরিত্রটি ‘ভিলেইন’ হিসেবে উপস্থাপন করাতেই ‘গোস্বা’ করেছেন নরিয়েগা। মামলাটি করা হয়েছে চলতি মাসেই।
মাইকেল জ্যাকসন:
পপ কিংবদন্তী মাইকেল জ্যাকসনের ‘মুনওয়াকিং’ নাচের কথা মনে আছে তো? সালটা ১৯৮৮, জ্যাকসন তখন খ্যাতির শীর্ষে। হলিউডই বা পিছিয়ে থাকবে কেন? ব্যাস তৈরি হলো জ্যাকসনকে নিয়ে সিনেমা ‘মুনওয়াকার’। জ্যাকসনের ওই জনপ্রিয়তার কাজে লাগিয়েছিল সেগা কর্পোরেশনও। সিনেমার সঙ্গে মিল রেখে তৎকালীন শীর্ষ আর্কেড গেইম নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি বানিয়ে ফেলে ‘মুনওয়াকার গেইম’। ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এই গেইমটি। গেইমিং জগতের উপর ‘মুনওয়াকার’-এর প্রভাব ছিল এক কথায় ‘গ্রাউন্ডব্রেকিং’।
মাইক টাইসন:
শুরুতে পাঞ্চ আউট আর সুপার পাঞ্চ আউট গেইম দুটি ছিল আর্কেড গেইম। গেইম দুটি নিনটেনডো হোম সিস্টেমে আসার পর এতে যোগ হয়েছিলেন বক্সিং কিংবদন্তী মাইক টাইসন। গেইমারকে মাইক টাইসনের সঙ্গে লড়তে হত এক ‘সুপার চ্যালেঞ্জের’ অংশ হিসেবে। মাইক টাইসনের সঙ্গে লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর ওই প্রতিযোগীর নাম বদলে দেয়া হয়েছিল ‘মিস্টার ড্রিম’।
অ্যারোস্মিথ:
৯০ এর দশকের আর্কেড গেইম ‘রেভলিউশন এক্স’-এ অপহরণকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করতে হত মার্কিন রক ব্যান্ড অ্যারোস্মিথ এর সদস্যদের। গেইমটির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকগুলোও ছিল অ্যারোস্মিথের।
টনি হক:
মার্কিন প্রফেশনাল স্কেটবোর্ডার টনি হককে নিয়ে ১৯৯৯ সালে নেভারসফট তৈরি করেছিল স্কেটবোর্ডিং গেইম ‘টনি হক প্রো স্কেটার’। ট্যাটু আর্টিস্ট ক্যাট ভন ডি, র্যাপার লি’ল জন ও মার্কিন রক ব্যান্ড গ্রিন ডে-র প্রধান ভোকালিস্ট বিলি জো আর্মস্ট্রংও ছিলেন এই গেইমটিতে।
সাদ্দাম হোসেন:
২০০০ সালে মুক্তি পেয়েছিল “সোলজার অব ফরচুন” গেইমটি। আর গেইমটিতে ‘ভিলেনের’ চরিত্রে ছিলেন ইরাকের তৎকালীন স্বৈরশাষক সাদ্দাম হোসেন। ‘সাউথ পার্ক র্যালি” গেইমটিতেও ছিলেন তিনি।
ফিল কলিন্স:
জনপ্রিয় গেইম সিরিজ ‘গ্র্যান্ড থেফট অটো’-তে এযাবতকালে উপস্থিতি ছিল একাধিক তারকার। তবে প্রথম ‘মেইনস্ট্রিম’ তারকা হিসেবে ২০০৬ সালে গেইমটিতে কন্ঠ দিয়েছিলেন ফিল কলিন্স। ২০০৬ সালের ‘ভাইস সিটি স্টোরিস’-এ ঘাতকদের হাত থেকে বাঁচাতে হয় ফিল কলিন্সকে। এর পুরস্কার হিসেবে কলিন্সের একটি কনসার্টে অংশগ্রহন করার সুযোগ পায় প্লেয়াররা।
বিটলস:
জনপ্রিয় রক ব্যান্ড বিটলসকে নিয়ে ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর  হারমিনোক্স তৈরি করে মিউজিক ভিডিও গেইম ‘দ্যা বিটলস: রক ব্যান্ড’। গেইমটিতে ব্যান্ডটির হিট ট্র্যাকগুলো পারফর্ম করতে পারতেন গেইমাররা, পারফর্ম করতে পারতেন লিভারপুল ক্যাভার্ন ক্লাব থেকে শুরু করে ব্যান্ডটির শেষ কনসার্ট ভেনু লন্ডন পর্যন্ত।
হিটলার:
“স্নাইপার এলিট ৩”-এ গেইমারদের একটাই কাজ, নাৎসিদের খুন করা। এ ছাড়াও এডিশনাল কনটেন্ট ডাউনলোড করে অ্যাডলফ হিটলারকে মারার সুযোগও পাবেন প্লেয়াররা।
ডেভিড পেট্রিয়াস:
নরিয়েগার মতো “কল অফ ডিউটি: ব্ল্যাক অপস ২”-তে ছিলেন সাবেক সিআইএ পরিচালক জেনারেল ডেভিড পেট্রিয়াস। অবশ্য গেইমে তাকে উপস্থাপন করা হয়েছে ২০২৫ সালের মার্কিন সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স হিসেবে।
ব্রুস উইলিস
: সেগা কর্পোরেশনের ‘ডিনামাইট কপ’ গেইমটির প্রধান চরিত্র ব্রুনো ডেলিনগারের চেহারা তৈরি করা হয় মার্কিন চলচিত্র তারকা ব্রুস উইলিসের অনুকরণে। গেইমটির নামও হওয়ার কথা ছিল ‘ডাই হার্ড’। কিন্তু ১৯৮৮ সালের ব্রুস উইলিসের ডাই হার্ড চলচিত্রটির সাথে কপিরাইট বিষয়ক বিপত্তির কারণে গেইমটির নাম পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় সেগা।
টেইলর সুইফট:
২০০৯ সালে তৈরি অ্যাকটিভিশনের মিউজিকাল গেইম ‘ব্যান্ড হিরো’-তে ব্যবহার করা হয়েছে পপ গায়িকা টেলর সুইফট ও পপ-রক ব্যান্ড ‘মারুন ৫’ এর অ্যাডাম লাভিনের প্রতিকৃতি।
নো ডাউট:
ব্যান্ড হিরো গেইমটিতে আমেরিকান পপ ব্যান্ড নো ডাউটের ভোকালিস্ট গোয়েন স্টেফানির প্রতিকৃতিও ব্যবহার করে অ্যাকটিভিশন। তবে অন্য ব্যান্ডের গানে স্টেফানির প্রতিকৃতি ব্যবহার করার সুযোগ দেয়ায় অ্যাকটিভিশনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।