এই বিষয়ে সিএনএন-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের আলোকে চলুন জেনে নেই ওয়াকম্যান সম্পর্কিত তথ্যগুলো--
সংগীতপ্রেমীদের জন্য জাপানিজ প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা সনি ১৯৭৯ সালের জুলাইয়ের এক তারিখ বাজারে নিয়ে আসে পোর্টেবল ক্যাসেট প্লেয়ার ওয়াকম্যান। বাজারে আসার পর দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে পণ্যটি। ওই সময়ে ওয়াকম্যানের জনপ্রিয়তার সঙ্গে বর্তমানের আইপডের জনপ্রিয়তার তুলনা করলে ভুল হবে না।
সনির প্রথম বাজারে নিয়ে আসা ওয়াকম্যান মডেলটি ছিল টিপিএস-এল২। যদিও এর আগে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের ‘স্টেরিওবোল্ট’ নামের পোর্টেবল ক্যাসেট প্লেয়ার ছিল। কিন্তু তুলনামূলক বৃহৎ আকৃতি এবং দামের আধিক্যের কারণে স্টেরিওবোল্ট বাজারে সুবিধা করতে পারেনি।
১. ওয়াকম্যান নামকরণ নিয়েও রয়েছে মজার এক ঘটনা। জাপানিজ প্রতিষ্ঠান সনি প্রথমে পণ্যটি ইংরেজি-ভাষাভাষীদের দেশগুলোতে ‘সাইন্ডঅ্যাবাউট’ নামে রপ্তানি করেছিল। তাদের আশংকা ছিল ইংরেজি-ভাষাভাষীরা ওয়াকম্যান নামটি পছন্দ করবে না। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত তাদের ভুল বুঝতে পেরে আবার ওয়াকম্যান নামটিতে ফিরে আসে।
২. ওয়াকম্যানের বাজার চাহিদা নিয়ে চিন্তিত ছিল খোদ সনি! অনেক বিশ্লেষকই মনে করেছিলেন এতে রেকর্ড ক্ষমতা না থাকায় পণ্যটি বিক্রি হবে না।
৩. ১৯৮১ সালে সনি বাজারে নিয়ে আসে ওয়াকম্যান-২। নতুন সংস্করণে ওয়াকম্যানের আকার আরও ছোট করেছিল সনি। প্রায় ১৫ লাখ ইউনিট বিক্রি হয়েছিল ওয়াকম্যানটি। প্রথমে ওয়াকম্যান ২ রুপোলি রংয়ে বাজারে ছাড়লেও পরে কালো এবং লাল রংয়ের মডেলের ওয়াকম্যান ২ নিয়ে এসেছিল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।
৪. ওয়াকম্যানের প্রভাব এড়াতে পারেনি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার কর্মীরাও। ১৯৮৪ সালে স্পেস শাটল ডিসকভারি ক্রু মাইকেল এল কোয়াটস এবং মিশন বিশেষজ্ঞ স্টিভেন এ. হলে ওয়াকম্যানে গান শুনতে শুনতে শাটলের লোয়ার ডেক-এ ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।
৫. শুরুর দিকের ওয়াকম্যানগুলো যাতে নষ্ট না হয় বা ভেঙে না যায় সে জন্য খুব সাবধানে চালাতে হত। ব্যবহারকারীদের এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে ১৯৮৪ সালে সনি বাজারে নিয়ে আসে অতিরিক্ত পুরুত্বের শক্ত এবং পানিরোধক ডব্লিইউএম-এফ৫ ‘স্পোর্টস ওয়াকম্যান’।
৬. গ্রাহকরা যাতে সিডিতেও গানও শুনতে পারেন, সে জন্য ১৯৮৪ সনি ‘ডিস্কম্যান’ নামে ওয়াকম্যানের ভিন্ন একটি সংস্করণ বাজারে নিয়ে এসেছিল।
৭. আইপডের যুগে এসে ম্লান হতে শুরু করে ওয়াকম্যানের ঐতিহ্য। তবে সনিও থেমে থাকেনি, অন্যান্য প্রযুক্তি পণ্যের সঙ্গে ওয়াকম্যানকেও ডিজিটাল পণ্যে রূপান্তর করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১০ সালের পর থেকে আর ক্যাসেটভিত্তিক ওয়াকম্যান উৎপাদন করেনি সনি। বর্তমানে বিদ্যমান এনডব্লিইউজেড-ডব্লিইউ২৭৩ আকৃতি অনেক হেডফোনের চেয়েও ছোট বলেই জানিয়েছে সিএনএন।