জিমেইল দশকপূর্তিতে ১০ হ্যাক

পয়লা এপ্রিল দশম জন্মদিন পালন করবে গুগলের জনপ্রিয় মেইল সার্ভিস জিমেইল। মেইল আদান-প্রদান ছাড়াও জিমেইলে যে অনেকগুলো মজার আর কার্যকর ফিচার আছে তা হয়তো জানেন না বেশিরভাগ ব্যবহারকারীই।

আব্দুল্লাহ জায়েদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2014, 10:46 AM
Updated : 30 March 2014, 10:47 AM

আছে শর্টকাট, কাস্টম অপশন আর ‘কুইক হ্যাক’ যা পাল্টে দিতে পারে আপনার জিমেইল অভিজ্ঞতা। কেবল ঝামেলা একটাই, আগে জেনে নিতে হবে সেই খুঁটিনাটি বিষয়গুলো। জিমেইলের এমন ১০টি মজার ‘টিপস অ্যান্ড ট্রিকস’ হল-

১. কিবোর্ড শর্টকাট: বারবার মাউসের কার্সার টেনে বাটনে ক্লিক না করে কিবোর্ড থেকেই করা সম্ভব জিমেইলের সিংহভাগ কাজ। কিবোর্ড দিয়ে কাজ সারতে আছে বেশ কিছু শর্টকাটও। তবে এর বেশিরভাগই হয়ত জানা নেই বেশিরভাগ ব্যবহারকারীরই। তাই জিমেইলের কিবোর্ড শর্টকাট নিয়ে আলাদা সাপোর্ট পেইজ চালু রেখেছে গুগল। সাপোর্ট পেইজটি থেকে যেনে নেওয়া যাবে সবগুলো কিবোর্ড শর্টকাট। সাপোর্ট পেইজেটি পাবেন

তবে শর্টকাটগুলো দেখে নেওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে জিমেইল অ্যাকাউন্টে ঢুকে ‘?’ বাটনটি চেপে নেওয়া। শিফট চেপে ‘?’ চাপলেই পপ-আপ উইন্ডোতে চলে আসবে শর্টকাটগুলো।

২. ‘আনডু সেন্ট মেসেজ’: রাগের মাথায় লেখা মেইল পাঠিয়ে দিয়ে অথবা ভুল করে সেন্ট বাটন জিমেইল ইউজারদের মাথা চাপড়ানোর ঘটনা নতুন নয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে জিমেইলে কোনো মেইল সেন্ট হবার পরও ‘আনডু’ করা সম্ভব।

এজন্যে প্রথমে জিমেইল অ্যাকাউন্টের ডান দিকের গিয়ার আইকনে ক্লিক করে সেটিংসে যেতে হবে। সেটিংস থেকে ‘ল্যাবস’ অপশনে গিয়ে স্ক্রল ডাউন করে খুঁজে নিয়ে ‘এনাবল’ করে নিতে হবে ‘আনডু সেন্ড’ ফিচারটি। এটি এনাবল করার পর এর কার্যকারীতাও পরীক্ষা করে নিতে পারেন ব্যবহারকারীরা।

জিমেইল যারা একেবারেই নতুন ব্যবহার করছেন তাদের অনেকেই হয়তো জানেন না ‘ল্যাবস’ সম্পর্কে। জিমেইলের সেটিংসের এই অংশ থেকে বিভিন্ন নতুন এবং ক্ষেত্র বিশেষে চমকপ্রদ ফিচার পরীক্ষা করার সুযোগ পান একজন ব্যবহারকারী। তবে ল্যাবস সেকশনের অন্তর্ভূক্ত ফিচারগুলো সাধারনত স্থায়ী কোনো ফিচার হয় না, যে কোনো সময় ফিচারগুলো বন্ধ বা পাল্টে দিতে পারে গুগল।

তবে আশার বিষয় হচ্ছে, মেইল আনডু করার ফিচারটি ল্যাবসের অংশ হিসেবে টিকে আছে ৪ বছর ধরে। মেইল পাঠানোর পর পরই জিমেইল পেইজের উপরে চলে আসবে একটি হলুদ বার। যাতে ‘আনডু’ অথবা ‘ভিউ মেসেজ’ অপশনটি থাকবে। মেইল আনডু করতে হলে দ্রুত হলুদ বারটিতে ক্লিক করতে হবে ব্যবহারকারীকে। কারণ, বারটির স্থায়ীত্ব অল্প কয়েক সেকেন্ড।

৩. অ্যাটাচমেন্ট সার্চ: ধরুন কয়েকদিনের পুরানো একটি মেইলে হয়তো গুরুত্বপূর্ণ ফাইল অ্যাটাচমেন্ট হিসেবে ছিল, কিন্তু এখন আর খুঁজে পাচ্ছেন না সেই মেইল আর অ্যাটাচমেন্ট হিসেবে থাকা ফাইলটি। এক্ষেত্রে কয়েকশ’ মেইল একটা একটা করে না খুঁজে জিমেইল সার্চবারে ‘has:attachment’ লিখে সার্চ করুন। ফাইল অ্যাটাচ করা আছে কেবল এমন মেইলগুলোই আসবে সার্চ রেজাল্টে। কিছুটা হলেও সহজ হয়ে যাবে বিশেষ সেই মেইলের অনুসন্ধান।
৪. ক্যানড রেসপন্স: একই মেইল যদি বারবার পাঠাতে হয় তবে পুরো কাজটি সহজ করে দিতে পারে জিমেইলের ‘ক্যানড রেসপন্স ফিচার’। এটির জন্যেও গিয়ার আইকন থেকে সেটিংসের ল্যাবস সেকশনে ঢুকতে হবে। স্ক্রল ডাউন করে খুঁজে নিতে হবে ‘ক্যানড রেসপন্স’ ফিচারটি।

অপশনটি এনাবল করার পর মেসেজ বক্সের ডান দিকে নিচের কোনে চলে আসবে নতুন একটি ‘অ্যারো সিম্বল’। ওই অ্যারোতে ক্লিক করলেই পপ আপ উইন্ডোতে অপশন হিসেবে চলে আসবে ‘ক্যানড রেসপন্স’। সেখান থেকে তৈনি করা যাবে যে কোনো অটোমেটিক মেসেজ।

৫. দ্রুত জিমেইল লোড করবেন যেভাবে: জিমেইলের ইনবক্স লোড হতে বেশি সময় লাগলে মেইল সার্ভিসটির বেসিক মোডে সুইচ করা যেতে পারে। ইউআরএলের শেষে ‘/?ui=html’ যোগ করে দিলেই সরাসরি চলে যেতে পারেন বেসিক মোডে। এতে জাভা স্ক্রিপ্ট ছাড়াই লোড হবে আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্টটি। তবে বেসিক মোড ব্যবহারের নেতিবাচক দিকটি হল, এতে জিমেইলের আধুনিক অনেক ফিচারই ব্যবহারের সুযোগ থাকবে না। তবে ইনবক্সের মেইলগুলো খুলবে অনেক দ্রুত।
৬. ডট আর প্লাস সাইন দিয়ে তৈরি করুন ফিল্টার: জিমেইলের একটা ‘ব্লাইন্ডস্পট’ হল ডটস আর প্লাইস সাইন চেনে না মেইল সার্ভিসটি। তবে ওই ব্লাইন্ডস্পটগুলো কাজে লাগিয়েই আলাদা আলাদা ফিল্টার তৈরি করা সম্ভব। এক ব্লগ পোস্টে ব্লাইন্ডস্পটগুলো কাজে লাগানো এই অভিনব পন্থা বাতলে দিয়েছে খোদ গুগল কর্মীরা।

ধরা যাক আপনার মেইল অ্যাড্রেসটি হল myaccount@gmail.com । এখন কোনো নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করার জন্য বা কোনো সোশাল মিডিয়ায় সাইন আপ করার সময় myaccount+newsletter@gmail.com বা myaccount+socialmedia.com ঠিকানাটি দেওয়া যেতে পারে। এরপর ওই মেইলগুলোর জন্য আলাদা ফিল্টার তৈরি করেই হবে।

৭ ট্যাবের যোগ-বিয়োগ: জিমেইল ইনবক্সে নতুন ট্যাব যোগ করা শুরু করেছে ২০১৩ সালের মে মাস থেকে। প্রাইমারি, সোশাল আর প্রেমোশোনাল এই তিনভাগে মেইলগুলো ফিল্টার করে জিমেইল। চাইলেই বাদ দেওয়াও যাবে ট্যাবগুলো।

ডানের গিয়ার আইকন থেকে ‘কনফিগার ইনবক্স’ অপশনে যান। নতুন একটি পপ-আপ উইন্ডো চলে আসবে যা থেকে বাদ দেওয়া যাবে সোশাল এবং প্রোমোশনাল ট্যাব দুটি। মজার ব্যাপার হচ্ছে ওই পপ-আপ উইন্ডো থেকে ‘আপডেটস’ এবং ‘ফোরামস’ নামের আরও দুটি ট্যাব চালু করার সুযোগও আছে ।

৮. ব্রাউজার ট্যাবে ইনবক্স কাউন্ট: একাধিক ট্যাব খোলা থাকলে বারবার পেইজে না ঢুকেই যেনে নেওয়া সম্ভব ইনবক্সে জমা হওয়া মেইলের সংখ্যা। আর এটিও করতে হবে ‘ল্যাবস’ অপশন থেকেই। ল্যাবসে যেয়ে স্ক্রল ডাউন করে এনাবল করতে হবে ‘আনরিড মেসেজ আইকন’ ফিচারটি। সঙ্গে সঙ্গে যে ট্যাবটিতে ইনবক্স খোলা আছে তাতে দেখা যাবে ইনবক্সে জমা হওয়া মেইলের সংখ্যা।
৯. রং বেরঙের স্টার: জিমেইলের ইনবক্সের গুরুত্বপূর্ণ মেইলগুলো মার্ক করার জন্য স্টার ফাঙশনটি বহুল ব্যবহৃত। মেইল মার্ক করার জন্য বিভিন্ন রঙের এবং বিভিন্ন সিম্বল/সংকেতও ব্যবহার করা সম্ভব জিমেইলে। এজন্য সেটিংস অপশন থেকে যেতে হবে ‘স্টার্স’-এ। সেখান থেকে ঠিক করে নেওয়া যাবে পছন্দরে রং আর সিম্বল।
১০. কাস্টম থিম: জিমেইলের সবচেয়ে সহজ কিন্তু অনেকের কাছেই অজানা ফিচার হচ্ছে একজন ব্যবহারকারী তার নিজের ছবি দিয়েই বানাতে পারবেন জিমেইলের ব্যাকড্রপ বা থিম । সেটিংসের থিম অপশন থেকে যেতে হবে ‘কাস্টম থিমস’-এ। সেখান থেকে ‘লাইট’ এবং ‘ডার্ক’ এই দুটি অপশন থেকে ইমেইল এবং ফন্টের রং পছন্দ করে নেওয়া যাবে। তারপর ‘Select a background image’ অপশন থেকে আপলোড করে নিতে হবে নিজের পছন্দের ছবি। ব্যাস, হয়ে গেল কাস্টম থিম।