২০ কোটি মার্কিনির স্পর্শকাতর ডেটা ফাঁস

একটি বিপনণ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রায় ২০ কোটি মার্কিন নাগরিকের স্পর্শকাতর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পার্টি’র রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি’র সঙ্গে ওই বিপনণ প্রতিষ্ঠানটির চুক্তি ছিল।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 June 2017, 11:06 AM
Updated : 20 June 2017, 11:06 AM

১.১ টেরাবাইটের এই ডেটায় যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬২ শতাংশের জন্ম তারিখ, বাসার ঠিকানা, টেলিফোন নাম্বার ও রাজনৈতি মতাদর্শ সম্পর্কিত তথ্য রয়েছে, বলা হয়েছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে। মার্কিন ক্লাউড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের ক্লাউড সার্ভারে এই ডেটা সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। এই ডেটাবেইসের লিংক আছে এমন যে কেউই এটি অ্যাকসেস করতে পারতেন। 

এ খবর প্রকাশের আগের সপ্তাহে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান আপগার্ড-এর সাইবার-ঝুঁকি বিশ্লেষক ক্রিস ভাইকারি বিশাল পরিমাণ এই ডেটা আবিষ্কার করেন। সামাজিক মাধ্যম রেডিটে বিতর্কিত নিষেধাজ্ঞা হুমকি নিয়ে করা পোস্টগুলো থেকে শুরু করে রিপাবলিকান পার্টির জন্য তহবিল সংগ্রহ করা বিভিন্ন কমিটি- এমন বিস্তৃত পরিসরের উৎস থেকে এই ডেটাবেইসের তথ্য নেওয়া হয়েছে।

ডিপ রুট অ্যানালিটিকস-এর মালিকানাধীন একটি সার্ভারে আপলোড করা স্প্রেডশিটে এই তথ্য জমা করা হয়েছিল। চলতি বছর জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে যাত্রা শুরু করার পর এটি আপডেট করা হয় আর এটি অজানা সময় পর্যন্ত অনলাইনে ছিল। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক্স লন্ড্রি বলেন, “আমরা এই পরিস্থিতির পুরো দায় নিচ্ছি। তথ্যের উপর ভিত্তি করে আমরা এই পর্যন্ত সংগ্রহ করেছি, আমরা বিশ্বাস করি না যে আমাদের সিস্টেম হ্যাকড হয়েছে।”

“এই ঘটনা আমাদের নজরে আসার পর থেকেই, আমরা অ্যাকসেস সেটিংস আপডেট করেছি ও আর কোনো অ্যাকসেস ঠেকাতে প্রোটৌকল দিয়েছি।”

ব্যক্তিগত তথ্য ছাড়াও, নাগরিকরা কোনো ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, রাজনৈতিক সমর্থন কী তা নিয়ে অনুমান করা তথ্যও রয়েছে এই ডেটাবেইসে। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, গর্ভপাতের অধিকার ও স্টেম কোষ গবেষণার মতো বিতর্কিত বিষয়ে কার অবস্থান কেমন ছিল সে বিষয়েও তথ্য আছে এতে।

ফাইলের নাম থেকে বোঝা যায়, এই ডেটাবেইস রিপাবলিকান রাজনৈতিক সংস্থাগুলোর ব্যবহারের জন্য বানানো হয়েছিল। এর মাধ্যমে পাওয়া যায় এমন সব ডেটা ব্যবহার করে যত বেশি সম্ভব ভোটারের প্রোফাইল তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল। 

যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রাইভেসি রক্ষাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর নীতিমালা কর্মকর্তা ফ্রেডেরাইক কালথেউনার বলেন, “এটি গভীর সমস্যার। এটি শুধুই স্পর্শকাতর নয়, এতে ব্যক্তিগত তথ্য, মানুষের আচরণ, মতবাত ও বিশ্বাস নিয়ে অনুমান যা তারা কখনও কারও কাছে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়নি এমন তথ্য আছে।”

“এটি গণতন্ত্রের চলার পথে হুমকি”-- যোগ করেন তিনি।

ফাঁস হওয়া এই ডেটা সহজেই বিভিন্ন অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে বলে শংকা রয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান অ্যালার্ট লজিক-এর সাইবার নিরাপত্তা প্রচারণাকারী পল হ্লেচার বলেন, “এ ধরনের ডেটা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ও ডার্ক ওয়েবে চলে যাওয়ার আশঙ্কা অত্যন্ত বেশি।”