সবচেয়ে ছোট ফোন সারাই দোকান লন্ডনে

বাংলাদেশে একসময় কয়েন বক্স নামে পাবলিক ফোন ছিল। পয়সা ফেলে ওই ফোন থেকে কল করা যেত। পশ্চিমে এই ব্যবস্থাই ছিল আরেকটু গোছানো। সেখানে দেখা যেত রাস্তার ধারে দাঁড় করানো টেলিফোন বক্স, সাধারণত লাল রঙের। মোবাইল ফোন আসার পর বাংলাদেশে যেমন কয়েন বক্স আর দেখা যায় না, তেমনি পশ্চিমেও এই বক্সগুলোর ব্যবহার একেবারেই হারিয়ে গেছে। কিন্তু এবার এগুলোকে নতুন করে ফিরিয়ে আনার আশা করছে এক ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2017, 10:29 AM
Updated : 30 May 2017, 10:29 AM

মোবাইল ফোন মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান লাভফোন যুক্তরাজ্যের লাল রঙের টেলিফোন বক্সগুলোতে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট মোবাইল ফোন মেরামতের দোকান খুলতে যাচ্ছে, বলা হয়েছে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড মিরর-এর প্রতিবেদনে।

২০১৬ সালের অগাস্টে দেশটির গ্রিনউইচ-এ একটি খোলার পর সম্প্রতি নাইটব্রিজ-এর ব্রম্পটন রোডে দ্বিতীয় বুথটি খোলে তারা। এই দোকানগুলোতে কয়েক ধরনের ইলেকট্রনিক্স মেরামত সেবা দিচ্ছে, সেইসঙ্গে এতে মোবাইল ফোন চার্জ ও ওয়াইফাই ব্যবহারের সুযোগও রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য হচ্ছে সামনের ১৮ মাসে লন্ডনের ৩৫টি জায়গায় এমন বুথ খোলা, এ ক্ষেত্রে লন্ডনের বাইরে ফ্র্যাঞ্চাইজ অপশনও দেওয়া হচ্ছে। 

কিন্তু হঠাৎ এমন ভাবনা কোথা থেকে এল? প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাহী রবার কার বলেন, “ভার্জিন স্টার্টআপ কার্যালয়ে আমি বৈঠকে গিয়েছিলাম যেখানে আমার মাথায় এই ধারণা আসে, সেখানে একটি লাল ফোনকে ব্যক্তিগত স্কাইপ কল করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছিল।”

“এর ভেতরে যাওয়ার পর আমি বুঝতে পারি আইফোন মেরামতের জন্য এটি যথাযথ হবে আর অবহেলিত এই বক্সগুলোকে আবার জনসেবায় নিয়ে আসতে এটি একটি দারুন উপায় হবে।”

“আমি ইন্টারনেটে খুঁজে দেখলাম বিটি-এর কাছ থেকে রেড কিয়স্ক এই বক্সগুলো কিনে নিচ্ছে আর এগুলোতে কফি শপ বসাচ্ছে।” এরপর গ্রিনউইচে একটি খোলার পর এতে ভালো সাড়া পাওয়া তার ধারণাকে প্রমাণ করে বলেও জানান তিনি। “সেখানকার লোকজন এটিকে পছন্দ করেছে আর আমরা এখন লন্ডনজুড়ে এটি চালু করতে যাচ্ছি।”

এই বুথ চালাতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী? কার-এর মতে, এ প্রকল্পে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে একটি ফোন বক্সের ভেতর কাজ করবেন এমন উচ্চদক্ষতা সম্পন্ন কারিগর খুঁজে পাওয়া। “যদি আপনি ভাবেন তাহলে বুঝবেন, এক বর্গমিটারের একটি কাজের জায়গায় সাধারণ কর্ম পরিবেশ নেই।”

“তারপরও আমরা কয়েকজনকে পেয়েছি যারা এতে কাজ করছেন ও এটি উপভোগ করছেন, যদি না বৃষ্টি হয়।”

এই টেলিফোন বক্সগুলোতে বিশেষভাবে বানানো একটি পড রাখা হয়েছে, যাতে সিসিটিভি, ইন্টারনেট, চার্জিং পোর্ট, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা আর একটি আইপ্যাড রাখা হয়েছে। দিনের যে নির্দিষ্ট সময়গুলোতে কাজের চাপ কমে যায়, তখন লাভফোন কারিগররা পুরানো আইফোন ঠিক করেন, এগুলো পরে প্রতিষ্ঠানটি অনলাইনে বিক্রি করে।

এ ক্ষেত্রে কর্মীদের একটানা যে এমন বুথে রাখা হয় তা নয়। কার বলেন, “আমরা কারিগরদের প্রতি সপ্তাহে আমাদের মূল দোকানেও নিয়ে আসি, এতে করে তারা মানসিকভাবে ভালো থাকেন।”

লাভফোন বর্তমানে এই মেরামত ধারণার সত্ত্বাধিকার রাখে। প্রতিষ্ঠানটি এখন হলবর্ন, হ্যাম্পস্টেড, রিচমন্ড, কেনসিংটন আর ওয়েস্টমিনিস্টার-এ এমন ক্ষুদে মেরামতের দোকান খুলতে রেড কিয়স্ক-এর সঙ্গে কাজ করছে।

এই মেরামতের দোকানের সেবা নিয়ে বলতে দিতে অ্যাপল স্টোর নিয়ে টিপ্পনিও কেটেছেন কার। তিনি বলেন, “এখন আর কখনও কাউকে অ্যাপল স্টোরে অ্যাপয়েনমেন্টের জন্য চারদিন অপেক্ষা করতে হবে না।”